Revolution, প্রবলভাবে দরকার মনে করছি একটা Revolution এর। এদেশে
হিন্দুদের যে রকম অবস্থা দিন দিন হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে এদেশ হিন্দুশুন্য
হতে বেশিদিন আর লাগবেনা। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য চলছে। এতদিন লিঙ্গ
বৈষম্য ছিল, এত মিটিং মিছিল হলো তার না হয় সমাধান হচ্ছে কিন্তু এই
বৈষম্যের জন্য রুখে দাড়াবে কে? আমরা তো আজ সংখ্যালঘু, আমাদের গলার জোর
নেই, আমরা চিৎকার করে ডাকলেও আজ আমাদের কথা কেউ শুনবেনা। আমাদের কথা শুনা
তাদের জন্য পাপ/গুনা। আজ হিন্দুদের মন্দিরে গেলে গুনা হয়, প্রতিমা দর্শনে
শিরক হয়, এত কিছু হচ্ছে তবুও নাকি হিন্দুরা সব দখল করছে, সকল ক্ষেত্রে
প্রভাব বিস্তার করছে। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই একটা উদাহরণ দেন কোথায়
এবং কোন সেক্টরে একজন হিন্দু সবচেয়ে বড় পদে আছেন, তিনি উত্তর দিতে পারেননা
তবু বলেন হিন্দুরা হেন তেন করছে, উদাহরন দেন পরিমল !!! দেশে প্রতিদিন
কতগুলো করে ধর্ষন, হত্যা হচ্ছে তার সব ই কি হিন্দু ??? না, হ্যা হিন্দুরা
সংখ্যায় অল্প, তবে সেই অল্প পরিমানের সাথে তুলনা করে বিচার করুন কারা এসব
অপকর্ম করছে, উত্তরটা আশা করি হিন্দু হবেনা। কিন্তু এসব ঘটনার মাঝে হিন্দুর
টা প্রচার পাচ্ছে বেশী। কিন্তু কেন? মানুষ চায়?? তবে তারা কি চায়?? তারা
কি এদেশে হিন্দুদের অবাঞ্ছিত ঘোষনা করতে চায়? হিন্দুরা অনেক ঘাত
প্রতিঘাতের মাঝে এদেশে টিকে আছে। ১৯৪৭,(৪৭-৭১), ১৯৭১, ১৯৯০-৯১ এই
সময়গুলোতে হিন্দুদের উপর সরাসরি আঘাত এসেছে তাতে একটা দেশের মেজরিটি জনগণ
আজ অস্তিত্ব হারানোর সন্মুখীন। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আমাদের আজকের এই
অবস্থানের পিছনের অন্যতম প্রধান কারন যেগুলো রয়েছে বলে আমি মনে করি,
১.অন্যান্য ধর্মের বিশাল প্রচারের পিছনে নিজের ধর্মকে হেয় মনে করা।
২.স্বতস্ফূর্তভাবে নিজের ধর্মীয় উৎসব না করতে পারা।
৩.নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে না জানা।
৪.নেতৃত্ব দানের মত যোগ্য ব্যাক্তির প্রবল অভাব।
৫.একাত্রতার প্রচন্ড অভাব।
আজকের অবস্থানে আমরা দেখি অনেক হিন্দুরাই নিজের ধর্ম পালন না করে,
ধর্মকে লালন না করে নিজেকে মুক্তমনা বা নাস্তিক ভাবতেই বেশী পছন্দ করে, অথচ
বিপদে পরলেই হে বাবা লোকনাথ,হে কৃষ্ণ উদ্ধার করো, উদ্ধার করো।
নাস্তিকতা একটি দর্শন যদি কেউ সেই পথ কে ধারন করতে চায় করুক, কিন্তু নিজের
ধর্মকে প্রকাশ করতে এত লজ্বা কেন? অনেককেই দেখা যায় নিজের নাম আর নামের
শেষের টাইটেল দিতে ভীষণ লজ্ঝা। মনমতো কিছু বসিয়ে নিচ্ছে , অন্তত ফেসবুকে
দেখলেই বুঝা যায়। অথচ এই আমরাই বাইরে গেলে জল বলতে পারিনা, বাবা না বলে
আব্বা বলি, আযান দিতে না দিতেই মোবাইলের গান অফ করে দেই। এই কি আমার ধর্মে
অবিশ্বাসী।
এতক্ষণ সমস্যার কথা ই বললাম কিন্তু সমাধান কি ?? আমার মনে হয় সমাধান একদিকেই আছে সেটা হচ্ছে
১.ধর্মচর্চা করা,
২.ধর্ম পালন করতে পারি আর না পারি কিন্তু ধর্মটাকে মনের ভিতরে লালন করা ।
৩.নিজের ধর্ম সম্পর্কে উচু ধারণা পোষন করা। (অন্তত কেউ ১৫ দিন ধর্মীয় বই পড়ুক তার এমনিতেই আসবে)
৪. একতাই শক্তি ( অর্থাৎ একতাবদ্ধ হওয়া)
এই শেষের দিকটাকে টার্গেট করে মানুষকে ধর্ম সম্বন্ধে জানানোর চেষ্টা
করছি, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথেই বলতে হয়, কাজ হচ্ছেনা তেমন, যতটা আশা
করি ততটা না। মানুষ এখন নিজেকে নিয়ে এত ব্যস্ততা দেখায় যে মনে হয় দম ফেলার
সময় নেই। কিন্তু আসল কথা কেউ বাড়তি ঝামেলা চায়না। সবাই ভাবে আমার তো
জ্বলছেনা তাই আমি কেন মলম লাগাবো? বেশ কিছু বছর আগে ও বাড়িতে কারো পেটে
কৃমি হলে বাড়ির সবার একই সাথে কৃমির ঔষধ খেতে হতো যেন সেটা অন্য কাউকে
আক্রমন না করে। আমাদেরকে ও অন্যের স্বার্থে সোচ্চার হতে হবে। আমরা
অতিরিক্ত সুবিধা চাইনা। আমরা চাকুরিতে হিন্দু কোটা চাইনা। শুধু এতটকুই
চাই যেন আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনা পাই। যাই হোক এত বলাতেও সবাই একটু
উত্তেজনা অনুভব করবে কিছু করা দরকার , এমনটা ভাববে কিন্তু কিছুক্ষন পরে সব
ঠান্ডা।
এভাবে হবেনা । আমাদের ধর্মীয় গুরুরা না পাচ্ছেন শিষ্যদের ঠিক রাখতে না
পারছেন ধুতির কাছা ঠিক রাখতে, না পারছেন সাধনায় সিদ্ধ হতে। তবে এর উপায় কি?
আমরা কি এভাবে নির্যাতিত হতে হতে শেষ হয়ে যাব? নির্যাতনের শেষ কি
হিন্দুদের ধ্বংশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে? উত্তর খুজে পাইনা। আজকে কেউ
হিন্দুআনী কথা বললে তাকে কাফের বলে মুরতাদ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। নিজের
ধর্ম নিয়ে কথা বলতে গেলে মালাউন শব্দটি শুনে শুরু করতে হয়। নিজের বাপ দাদার
সম্পত্তি সেটা নাকি শত্রু সম্পত্তি হয়ে যায়। নিজের মা বোনকে কেউ অত্যাচার
করলে তা নাকি হালাল । মূর্তি ভাঙলে নাকি দোষের কিছু হয়না। এভাবে আর
কত???????????????????????????
পরিশেষে আমার মনে হয় এর উত্তর একটাই, একটা Revolution, বিশাল একটা
বিষ্ফোরন দরকার। যেন সবার মনের মাঝে ঘুমন্ত বিবেকবোধ জেগে উঠে, তবে সেটা
সাধারন মানুষের দ্বারা হবে বলে মনে হয় না । ইস্কন কে দিয়ে আশা করেছিলাম
কিন্তু হিন্দু ধর্ম যেখানে বহু পথের সমন্বয় সেখানে তারা মৌলবাদের মত একপথ
ছাড়া অন্য কিছু শুনতেই রাজী না।
তাই আমার মনে হয় একটা অবতার দরকার। হ্যা একটা অবতার, পূর্ন অবতার না
হোক, বিষ্ণু অবতার না হোক, একটা আংশিক অবতার হলেও এই বাংলাদেশে একজন
অবতার হিসেবে মহাপুরুষ দরকার। তিনি যে পথ উত্তম মনে করবেন সেটাই দেখাবেন
কিন্তু আজ আমাদের মত পথহারা মানুষদের জন্য একটা পথের খুবই দরকার। যেহেতু
ঈশ্বর নিজেই বলেন পৃথিবীতে পাপ বেড়ে গেলে তিনি আসবেন ভালদের উদ্ধারের জন্য।
বর্তমানে যে অবস্থায় আছি এর থেকে ও কি বেশি কিছু হলে আমাদের অস্তিত্ব
থাকবে বলে কি ঈশ্বর মনে করেন?
তাই হে ঈশ্বর তোমার কাছে বিনীত প্রার্থনা দয়া করো, এই পাপের পঙ্কিলতা
থেকে উদ্ধার করো। সবাইকে একটা সঠিক পথ দেখাও। তুমি আস, তাড়াতাড়ি আসো।
আমরা তোমার অপেক্ষাতে আছি্ ।
|