সংস্কার ও মরণোত্তর কৃত্য সংস্কার কথাটির অনেক রকম অর্থ আছে। এখানে সংস্কার বলতে দশটি শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানকে বোঝানো হয়েছে। দশটি শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানকে একসাথে বলা হয় দশবিধ সংস্কার। এগুলো ছাড়াও আরও কিছু কৃত্য বা করণীয় অনুষ্ঠান আছে। মানুষ মরণশীল। মৃত্যুর পর পর মৃত ব্যাক্তির মরদেহের সৎকার এবং তার আত্মার শান্তি ও মুক্তির জন্য যে সকল শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান করা হয় তাকে বলা হয় মরণোত্তর কৃত্য।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শাস্ত্রীয় বিধি মতে দশটি সংস্কার কর্ম করার নিয়ম প্রচলিত আছে। শাস্ত্রীয় ভাষায় এই দশ কর্মকে বলে দশবিধ সংস্কার। দশকর্ম হলঃ- ১. গর্ভাধান ২. পুংসবন ৩. সীমন্তোন্নয়ন ৪. জাত কর্ম ৫. নামকরণ ৬. অন্নপ্রাশন ৭. চূড়াকরণ ৮. উপনয়ন ৯. সমাবর্তন ১০. বিবাহ
পিতা-মাতার দেহে ও মনে যেসব দোষ-গুণ থাকে সেগুলো সন্তানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়। এটা দেখে আর্য-ঋষিগণ গর্ভাধান বিধি প্রবর্তন করেছেন। শুভলগ্নে সন্তানের জন্মদানের জন্য যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান তাকে গর্ভাধান।
পুংসবন-
পুত্র সন্তানের কামনায় যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান করা হয়, তাকে পুংসবন বলে।
সীমন্তোন্নয়ন-
গর্ভাবস্তার অন্যতম সংস্কার সীমন্তোন্নয়ন। গর্ভগ্রহনের পর চতুর্থ, ষষ্ঠ বা অষ্টম মাসে এই সংস্কার করা হয়।
জাতকর্ম-
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র এ সংস্কার করতে হয়। এ সংস্কার কার্য হল-পিতা প্রথমত পুত্রকে স্বর্ণ দিয়ে পুত্রের মুখে মধু ও ঘৃত দেন এবং তার সাথে মন্ত্রোচ্চারণ করেন।
নামকরণ-
সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার দশম, একাদশ, দ্বাদশ বা শততম দিবসে নামকরণ করতে হয়। শৈশব সংস্কারের প্রথম সংস্কার সন্তানের নাম রাখার অনুষ্ঠানই নামকরণ সংস্কার।