হিন্দু ধর্মের মত ও পথ নিয়ে সিরিজ এ সবার সহযোগিতা পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। এবার নতুন একটা সিরিজ শুরু করছি হিন্দু দর্শন নিয়ে। আমরা জানি হিন্দু ধর্মে অনেক দর্শনের সমন্বয় ঘটেছে, কেউ বৈষ্ণব, কেউ শৈব, কেউ শাক্ত। তবে আমরা মূল নিয়ে আলোচনা করবো । এই সিরিজে আসবে দ্বৈতবাদ, দ্বৈতাদ্বৈতবাদ, অদ্বৈতবাদ ও মায়াবাদ। এগুলো সনাতন ধর্মের একদম মূল কিছু দর্শন। তবে আমি বিশ্বাস করি দর্শন শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ধর্মের না। সকল ধর্মই এখানে আসতে পারে। অন্য ধর্মের সান্নিধ্যতা বা মিল এখানে আসবে। আজকে সবচেয়ে সহজ ও সহজবোধ্য দর্শন নিয়ে আলোচনা করবো তা হচ্ছে দ্বৈতবাদ।
এটাকে সহজ এজন্যই বললাম যে আমাদের স্বাভাবিক জীবনব্যাবস্থা ও ঈশ্বরদর্শনের সাথে এর অনেক মিল। দ্বৈতবাদ সহজ কথায় অর্থ করলে এটা দাড়াচ্ছে দুইটি সত্তা। হ্যা এখানে দুইটি পক্ষ থাকবে। একপক্ষ দানকারী আর অপরপক্ষ হচ্ছে ভক্ত। যেমন ঈশ্বর হচ্ছে আলাদা একটা সত্তা। আর আমরা ভক্তরা আলাদা সত্তা। আমরা সব সময় ঈশ্বরের কাছে তার করুনা , দয়া চাই। সে হচ্ছে বিন্দু আমরা বৃত্তের চারপাশে তাকে কেন্দ্র করে ছুটে চলছি। মূল কথাই হচ্ছে এখানে ঈশ্বর ও ভক্ত সম্পূর্ণ আলাদা একটা সত্তা। পৃথিবী তথা ব্রক্ষ্মান্ড মানুষ থেকে আলাদা। প্রকৃতি ও পুরুষ একে আপর থেকে আলাদা। একটা পক্ষ অপর পক্ষের সান্নিধ্য পাবার জন্য আকুল থাকে। এবং ভক্ত যখন ঈশ্বরের সান্নিধ্য পাবে তখনই এর পূর্নতা পাবে। দর্শনটা অনেক চেনা ও সহজ লাগছে তাইনা। হ্যা এটা স্বাভাবিকভাবে প্রায় সব ধর্মেই চলে যেমন ইসলাম,খ্রিষ্টান প্রভৃতি। ইসলাম ধর্মে যেমন আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে নামায রোজা করা হয়, তেমনি হিন্দু ধর্মেও আমরা পূজা, অর্চনা, প্রার্থনা যা করি তার প্রায় সবই এই দর্শন অনুসারে। মূলত এটা সাধারণ একটা দর্শন। যার সাথে আমরা পরিচিত। তবে হিন্দু ধর্মে এর পরবর্তী কিছু দর্শন আছে কিন্তু এটা ধারণ না করতে পারলে অন্যগুলো হবেনা তাই এ সম্পর্কে আরো কিছু শ্লোক উদ্ধৃতি করছি।
ঋতং পিবন্তৌ সুকৃতস্য লোকে গুহাম্প্রবিষ্টৌ পরমে পরার্ধে। -- কঠোপনিষৎ ৩।১ -- শরীরের পরম উৎকৃষ্ট স্থানে গুহামধ্যে দুইজন প্রবিষ্ট হইয়া আছেন, তন্মধ্যে একজন অবশ্যম্ভাবী কর্মফল ভোগ করেন, অপর একজন তাহা প্রদান করেন।
জীবসংজ্ঞোহন্তরাত্মান্যঃ সহজ সর্বদেহিনাম্। যেন বেদয়তে সর্বং সুখং দুঃখঞ্চ জন্মসু।। --মনুসংহিতা, ১২।১৩ --অন্তরাত্মা নামে একটি স্বতন্ত্র আত্মা প্রত্যেক ব্যাক্তির দেহের সঙ্গে জন্মে, তাহাই সুখ-দুঃখ অনুভব করিয়া থাকে।
দ্বাবিমৌ পুরুষৌ লোকে ক্ষরাশ্চাক্ষর এব চ। ক্ষরঃ সর্বাণি ভূতানি কুটস্থোহক্ষর উচ্যতে।। উত্তমঃ পুরুষস্ত্বন্য পরমাত্মেতু্যদাহৃতঃ। যো লোকত্রয়মাবিশ্য বিভর্ত্যব্যয় ঈশ্বরঃ।। -- গীতা, ১৫।১৬,১৭ --লোকে দুই প্রকার পুরুষ প্রসিদ্ধ আছে, এক ক্ষর অন্য অক্ষর। সকল পদার্থ ক্ষর আর কুটস্থ (জীবাত্মা) পুরুষ অক্ষর বলিয়া উক্ত হন। কিন্তু অন্য (ক্ষর ও অক্ষর হইতে অতিরিক্ত) এক পুরুষ আছেন, তিনিই উত্তম পুরুষ, তিনিই পরমাত্মা শব্দের বাচ্য। তিনিই ঈশ্বর এবং তিনিই ত্রিলোকের মধ্যে প্রবিষ্ট থাকিয়া এই ত্রিলোককে পালন করেন।
আশা করি উপরের আলোচনাতে দ্বৈতবাদ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পেরেছি আমরা। হিন্দু ধর্মে অনেক মত আছে এটা সত্য তবে সেই মতের পালনকারীকে ও বিভেদ করে দেওয়া হয়েছে। জগতে উত্তম, মধ্যম ও অধম ভেদে তিন প্রকার অধিকারী আছে। যাহারা অধম ও মধ্যম অধিকারী তাদের জন্য এই পথই সর্বোত্তম পথ। তাদের জন্যই ই উপাসনার বিধান করা হয়েছে। উপাস্য ও উপাসক না হলে উপাসনা হইতে পারেনা। সুতরাং ধর্মের প্রথম স্তরের সাধকগণের ভক্তি আকর্ষণ ও কর্মযোগে প্রবৃত্ত করাইবার জন্যই শাস্ত্রে দ্বৈতবাদমূলক উপদেশ করা হয়েছে। আগামী পর্বে বাকী গুলো ধীরে ধীরে আলোচনা করবো আশা করি। ধন্যবাদ।
হুম আলোচনা শুরু হোক, আপনার উছিলায় অন্তত সবাই জানুক। আত্মা, আপনার সামনে একটা মানুষ কিছুক্ষন আগে মারা গেল, অথচ আপনি তাকে আগের মতই দেখছেন তার সব আছে কিন্তু কি নেই তাহলে? হ্যা তার জীবনিশক্তি। সেটাই হচ্ছে আত্মা। মানুষের প্রাণ। পরমাত্মা, হচ্ছে আত্মার মূল উৎস। অর্থাৎ ঈশ্বর। প্রথম পর্যায়ে পরমাত্মা চিন্তা করুন। একটা মানুষ বা যে কোন প্রাণী জন্ম হতে হলে আত্মা প্রয়োজন। যা পরমাত্মার একটি অংশ। তারমানে ঈশ্বরের একটি অংশ আমাদের মাঝে। তাই আমরা বলি আমাদের মাঝে ঈশ্বর আছেন। আমরা পৃথিবীতে আশার পরে এই জীবাত্মার কারণেই বেচে থাকি। কিন্তু এটা সবসময় তার মূল উৎসে যাওয়ার জন্য আকুল। এর মূল গন্তব্য হচ্ছে পুনরায় সেই পরমাত্মাতে লীন হওয়া। এর জন্যই এত সাধনা, পূজা, অর্চনা। কিন্তু পৃথিবীতে নানান পাপের কারণে ও কর্মফল ভোগের কারণে আমাদের আত্মা পরমাত্মাতে লীন হওয়ার মত যোগ্য থাকেনা। তাই গীতায় বলছে নিষ্কাম কর্ম কর, তাহলে তোমার কর্মফল হবেনা তখন তুমার আত্মা পরমাত্মাতে লীন হতে পারবে। যোগীরা ধ্যানের মাধ্যমে তাদের আত্মাকে পরমাত্মাতে লীন করে যা আমরা দেহত্যাগ বলি। আর ভক্তরা মানে ভক্তিযোগ অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণ তার ভক্তের আত্মা তার মাঝে লীন করে নেন। প্রশ্নের উত্তর কি দাদা যথেষ্ট হলো। নাকি আরো কিছু আছে? থাকলে নির্দ্বিধায় প্রশ্ন করুন।
ওকে দাদা মানলাম যে আমার শরীরে ঈশ্বর আছেন- আত্মা রুপে- কিন্তু তাতে কি বুঝলাম? আমার শরীরের প্রতিটি কোষে তিনি আছেন? নাকি কোন এক অদ্ভুত উপায়ে সুক্ষ্ম রুপে আছেন??? যদি আমার শরীরের কোন অংগ কেটে যায় তবে কি আমার সেই অংশে এখন আর ঈশ্বর নেই?
প্রশ্ন গুলো অনেক প্রিমিটিভ একদম শুরু থেকে মানুষ এটা করে আসছে
আত্মা কোন গন্ডীতে আবদ্ধ না। এটা অস্পর্শনীয়, ও অদৃশ্য একটি বিষয়। আগেই বলেছি আত্মা জীবনিশক্তি। তাই আত্মা যখন থাকবেনা দেহে তখন ই ঈশ্বর ও বিমূর্ত হলেন দেহ হতে। কোন অঙ্গ কাটা ছেড়ার সাথে এর সম্পর্ক থাকেনা। যেমন একজনের দুই হাত নাই, তার মানে কি ঈশ্বর তার মাঝে একটু কম আছে???? না ঈশ্বর যতটুকু থাকলে তার জীবন চলবে ততটুকু ই আছেন, যতটা অন্যের মাঝে থাকেন। তিনি সুক্ষ্ণ রুপে আমাদের মাঝে আছেন। আশা করি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পেরেছি। আরো কিছু থাকলে বলেন
কেন মানুষ মারা গেলেও তার মস্তিষ্ক কারযকর থাকে? এটার বিজ্ঞাননির্ভর উত্তর হয়তো আমি দিতে পারবোনা, তবে আমি যেটুকু বুঝি তা বলতে পারি মানুষ যখন মারা যায় তখন তার আত্মা টা চলে যায় এবং আত্মা ছাড়া সে অচল, তাকে আর বাচানো সম্ভব না, তবে তার যে দেহ প্রত্যঙ্গ আছে তা যদি কোন মৃত মানুষের মাঝে দেওয়া হয় তাহলে ও কিন্তু কাজ হবেনা। দরকার একজন জীবিত মানুষের মাঝে স্থানান্তরিত করার। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কর্মোপযোগী থাকলেও তার আত্মার অভাবে সে কার্যকর না। তারমানে আপনার কথামতোই আত্মা ছাড়া দেহ অচল।
আত্মা চোখ দিয়ে বের হয় এটা কোথাও পাইনাই। যোগের দর্শন অনুযায়ী উত্তর দেই। আমাদের দেহে ছয়টি চক্র আছে, মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান,মনিপুর, অনাহত, আজ্ঞাচক্র। আত্মা বের হওয়ার স্বাভাবিক নিয়ম হচ্ছে এই ষট্চক্র ভেদ করে ব্রক্ষ্মরন্ধ অর্থাৎ সহস্রসার পদ্ম মানে মাথার ব্রক্ষ্মতালু দিয়ে, কিন্তু অনেকসময় যখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে তখন দ্রুত আত্মা বের হয় তখন সঠিক পথে বের না হয়ে নয়টি পথের যে কোনটি দিয়ে বের হয়। একে বলা হয় অপমৃত্যু। ফাঁশ দেওয়া, আত্মহত্যা করা, দুর্ঘটনা এমন সব কারণে মৃত্যুতে আত্মার সদ্গতি হয়না। তখন সেই আত্মা সঠিক পথ পায়না। যেমনটা ধরতে পারেন, আপনি একটা রুম থেকে বের হবেন সঠিক পথ একটা যেটা দিয়ে বের হলে আপনি আপনার গন্তব্যে পৌছুতে পারবেন, কিন্তু অন্য পথে গেলে আপনাকে শুধু বিভ্রান্ত ই হতে হবে।
উত্তর কি পেয়েছেন দাদা, পরের প্রশ্ন কি? এগুলো তো কোনরকম পার পেয়ে যাচ্ছি, কোথায় গিয়ে যে ঠেকবো ভগবান ই জানে, তবে প্রার্থনা করি প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার মত ক্ষমতা যেন তিনি আমাকে দেন।
রাজেন্দ্র'দা... ফ্যানের সুইচ কখনো অফ করেছেন কি...? যদি অফ করে থাকেন তবে দেখবেন,আপনি অফ করে দিয়েছেন.. মোটরে কিন্তু এখন আর কারেন্টের ফ্লো নেই.. কিন্তু ফ্যান ঘুরছে... কয়েক পাক ঘুরে বন্ধ... জড়তার কারনে.. মানুষ মারা গেলে তার মস্তিষ্ক মাত্র ২০ সেকেণ্ড সচল থাকে.. মস্তিষ্ক সচল থাকা কিন্তু আত্মার উপস্হিতি প্রমাণ করেনা। 'আত্মা', সেই spiritual energy, প্রাণশক্তি.. আপনার মেশিন চালু রেখেছে মাত্র... energy source বিঘ্নিত.. মেশিন অফ! মেশিনের এনার্জি সোর্স কাজ করছেনা... তাই মোটরও কয়েবপাক ঘুরে বন্ধ হয়ে যাবে... এভাবে ভাবলে কেমন হয়?... আমাদের মেশিনটা একটু অন্যরকম.. কোনো মেশিনের কোনো পার্ট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে ঐ অংশ নিয়ে আরেকটা চালু মেশিনে লাগানো হয়... সেই মেশিনের এনার্জি দিয়েই এই পার্ট টা চলবে.. কিন্তু কম্পোনেন্টস গুলোকে একটু উপযুক্ত পরিবেশে রাখতে হয় এই যা!
দারুন লিখেছেন দাদা, মোট কথা এটাই, ফ্যানের পাওয়ার না থাকলে ফ্যান বিকল, আমার ঘরে লাইন নাই কিন্তু আমার যদি সামর্থ্য থাকতো তবে অন্যের ঘরের লাইন দিয়ে ফ্যান চালাতাম, কিন্তু সে সামর্থ্য তো আমার নাই, আমার আছে নিজের ফ্যানের পাখা খুলে অন্যের সচল ফ্যানে লাগানো। দারুন কথা। এই কথাগুলো নিয়ে অন্য জায়গায় একবার আলোচনা হয়েছিল, সেখানে উদাহরণ দিয়েছিলাম মোবাইল বা যন্ত্রপাতির ব্যাটারীর সাথ আত্মাকে তুলনা করে। আমার এক বন্ধু আবার উদাহরণ দিয়েছিল মোবাইল আর সিমকার্ড দিয়ে। মোট কথা এক ই । ধন্যবাদ অংকন দাদা।
ওকে মানলাম আমার দেহ যদি আত্মা ছাড়া অচল হয় তাহলে কোন সমস্যা নাই।
সমস্যা হল আমি যদি আমার দেহের কামনা বাসনা তৈরি হেতু নিজের কর্মফলের দরুন আবার ফিরে আসি পৃথিবীতে তবে সেটা কি আমার আত্মা জানবে?
আমি বলতে চাইছি আপনি শাস্তি পাচ্ছেন- কিন্তু জানেন না কেন পাচ্ছেন- ব্যাপারটা অদ্ভুত না???
আবার ধরেন কেউ আপনার আত্মার শান্তির জন্য শান্তির জল দিল- কিন্তু আপনি তো সেটাই পেলেন না। আপনি তো আরেকটা দেহের ভেতর বসে বসে বউ এর সাথে ঝগড়া করছেন। এটাই কি তবে শান্তি???
Dada Attar santi kamona manus kore tar mrittur por.Kintu apni jante parchen na je jar attar janno santi kamona korchen se kobe kokhon janmo grohon korbe.Amra karo Attar santi kamona kori ae vebe je se Sarge santi vog korche.Kintu Amra konodin e jante parbo na je se kokhon jonmo grohon koreche.hoyeto 1 year kinba 100 year o lagte pare..eta nirvor kore Oe baktir kromofol er upor.Kromo fall e nirvor kore tar sarge santi athoba naroke paper foll vog korar.Apni jodi konodin jante paren je sei manuser Atta abar janmo grohon koreche tahole santi kamona bando kore din..Kintu apni ki ta parben..Janen parben na.Tai mansush ei kaj kore Asa kori Answer ta peyechen..