ঈশ্বর যে দেবতা রূপে ধ্বংস করেন, তার নাম শিব। প্রকৃত পক্ষে শিব মঙ্গলের দেবতা। মঙ্গলের জন্যই তিনি ধ্বংস করেন।
বেদে সরাসরি শিবের উল্লেখ না থাকলেও শিবের অনুরূপ একজন দেবতার উল্লেখ আছে, তার নাম রুদ্র। রুদ্র শত্রুপক্ষের বীরদের বিনাশ করেন, তিনি রোগ-ব্যাধি দূর করেন। তাকে শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক বলা হয়েছে। পুরাণে শিবকে মহাদেব বলা হয়েছে। শিব ত্রিমূর্তির অন্যতম। লৌকিক দেবতারূপে শিবের পূজা প্রচলিত আছে।
শিবের রূপ
শিবের গায়ের রং তুষারের মত সাদা। তার মাথায় জটা আছে। শিবের তিনটি চোখ। একটি চোখ ঠিক কপালের মাঝখানে। তার মাথার একপাশে একটা বাঁকা চাঁদ রয়েছে। শিবের হাতে থাকে ডমরু ও শিঙ্গা নামক বাদ্যযন্ত্র এবং ত্রিশূল নামক অস্ত্র। তার গলায় থাকে রুদ্রাক্ষের মালা। এ ছাড়াও সর্প তার ভূষণ বা অলংকার। শিবের বাহন বৃষ। শিবের অনেক নাম। যেমন- মহাদেব, ত্রিপুরারি, ভোলানথ, বৈদ্যনাথ, নীলকন্ঠ ও আশুতোষ ( অর্থাৎ যিনি অল্পে তুষ্ট হন, ইত্যাদী।
শিব পূজার সময়
শিব পঞ্চ দেবতার অন্যতম। সকল দেবতার পূজার সময় শিবের পূজা করা হয়। তবে বিশেষ ভাবে ফল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে ঘটা করে শিবের পূজা করা হয়। এ তিথিতে শিবচতুর্দশী তিথি বলা হয়।
শিবের মাহাত্ম্য
শিব সৃষ্টিকে সংহার করেন। সংহারের পর আবার নতুন সৃষ্টি হয়। শিব মঙ্গল করেন। শিব শব্দটির মানেই মঙ্গল। তিনি অনেক মহৎ কাজ করেছেন। তিনি নাট্য ও নৃত্যে পারদর্শী এবং শিক্ষক। এ জন্য তাকে নটরাজ বলা হয়ভ তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রেও দক্ষ। তাই তাকে বৈদ্যনাথও বলা হয়। তিনি গজাসুরকে বধ করে তার চর্মকে পরিধেয় করেছেন। দেবতা ও দৈত্যরা একত্র হয়ে যখন সমুদ্র মন্থন করেছিলেন, তখন প্রথমে বিষ ওঠে। এই বিষ তিনি চুমুক দিয়ে পান করে কন্ঠে বা গলায় রেখে দেন এ জন্য তার কন্ঠ নীল হয়ে যায়। তাই তার এক নাম নীলকন্ঠ। তিনি দক্ষের যজ্ঞ ধ্বংস করে দিয়ে ছিলেন। মহাভারতের কিরাত নামক আদিবাসীর বেশে তিনি অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধ করে অর্জুনের বীরত্ব পরীক্ষা করেছিলেন এবং অর্জুনকে অস্ত্র দিয়েছিলেন। শিবপুরাণসহ অনেক পুরাণে মাহাত্ম্যের বর্ণনা আছে।
পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে ভক্তেরা পূজা করেন। শিবের উপাসকদের শৈব্য বলা হয়।
কৈলাশ দাদা অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট লিখেছেন। আগের কমেন্টে একটা ক্যাচালের কথা বলেছিলাম তার অনুযায়ী বলি, ব্রক্ষ্মবৈর্বত পুরানে শ্রীকৃষ্ণ শিবকে বলেন তার মত পাপী আর নাই যে তোমাকে আর আমাকে আলাদা করে দেখে বা মনে করে। তার মানে সেই একেশ্বরবাদের কথা আসছে। প্রতিটি দেবতাই ঈশ্বরের বিভিন্ন রুপ। যাকেই পূজা করিনা কেন ঈশ্বরকেই পূজা করছি। ও নমো: শিবায়