মন্দিরের আদলে দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ ফটক। একটি নয়, পর পর তিনটি। মণ্ডপ ঘিরে ঝলমলে আলোর খেলা। এ রকম নানা আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী রমনা কালীমন্দিরে এবার নজরকাড়া জাঁকজমক সহকারে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। আগামীকাল রোববার সকালে ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দেবীর বোধন হবে। এই দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এ বছরের শারদীয় দুর্গাপূজার। গত মঙ্গলবার মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেবীর আগমনী বার্তা ও দেবীপক্ষ। গতকাল শুক্রবার রমনা কালীমন্দির পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলা একাডেমীর বিপরীত দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে মন্দিরের প্রবেশমুখে সুউচ্চ ফটক। ভেতরে ঢুকতেই মন্দিরের সামনে প্রায় একই রকম আরও দুটি ফটক। এ ছাড়া পূজা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় থাকছে আরও দুটি ফটক। মন্দির কমিটির সূত্র জানায়, ফরিদপুরের শিল্পীদের দিয়ে কারুকাজ করা ফটকগুলোসহ মোট ছয়টি ফটক তৈরিতে খরচ পড়েছে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। এই মণ্ডপের প্রতিমা তৈরি ও আনুষঙ্গিক সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন মণ্ডপ ও এর আশপাশে আলোকসজ্জার কাজ চলছে। রমনা কালীমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দয়াময় বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে এখানে ধারাবাহিকভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার আরও বড় কলেবরে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদ্যাপনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজার দিন প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া প্রতিদিনই মণ্ডপ প্রাঙ্গণে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে মন্দিরের সামনের সড়কটি এখনো সংস্কার না হওয়ায় বিপত্তি ঘটার আশঙ্কা আছে। কাদার কারণে সড়কটির অনেকাংশ স্বাভাবিক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে বহুবার তদবির করেও ফল হয়নি। তবে মন্দির কমিটির উদ্যোগে বালু ফেলে আপাতত সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে দুর্গাপূজা উদ্যাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া ও আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষ। প্রতিবারের মতো হল প্রাঙ্গণে আলোকসজ্জার প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে। হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে জগন্নাথ হলের দুর্গাপূজাও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। উৎসব উদ্যাপনের সব অনুষঙ্গ আর চমৎকার পরিবেশ থাকায় প্রতি বছরই অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী এখানে পূজা দেখতে আসেন। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না, এমনটাই প্রত্যাশা তাঁদের। হলের পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রাধ্যক্ষ অজয় কুমার দাশ বলেন, ৩০ বছর ধরে জগন্নাথ হলে পূজা হচ্ছে। এবারও সাধ্যমতো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির সূত্র জানায়, আগামীকাল ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিভাবে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সোমবার সপ্তমী, পরদিন অষ্টমী ও বুধবার নবমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব শেষ হবে সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো