১। হ্যাঁ , দেবতারাও ইশ্বরের বিভিন্ন প্রকাশ। শুধু দেবতারা কেন মানুষসহ সমস্ত জীবই ভগবানের অংশ বা অংশাংশ। ভগবান পূর্ণ এবং জীব অংশ। অংশের কাজ হল পূর্ণের সেবা করা।দেবতারা ভগবানের প্রকৃত স্বরূপ না জানার কারণ হল-তারা স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর পরিমাণে ইন্দ্রিয় তৃপ্তির সুযোগ পায়। ইন্দ্রিয়ভোগের সুযোগ যার যত বেশি, সে ততটাই ভগবানের স্মরণ থেকে দূরে থাকে। এরকম আপনারা ভাগবতম্ পড়লে পাবেন, দ্বাপরযুগে বৃন্দিবন লীলায় দেবরাজ ইন্দ্রও ভগবানকে বুঝতে না পেরে কৃষ্ণ ও বৃন্দাবনবাসীদের উপর ক্ষেপে গিয়ে তাদের কষ্ট দেয়ার প্রয়াসী হয়েছিলেন। পরে বুঝতে পেরে ভগবানের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। একইভাবে ব্রহ্মাও ভুল করেছিলেন। একারণে ভগবানকে সঠিকভাবে উপলিব্ধ করার মানসে দেবতারাও ভগবানের কাছে মানব জন্ম পাবার আকাঙ্ক্ষা করেন।
২. হ্যাঁ, ভগবদগীতাকে অবশ্যই ভক্তির মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়। তা না হলে গীতার জ্ঞান পুথিগতই থাকবে। এ জ্ঞান এতই রহস্যময় যে যতবারই ভক্তিভরে পরবেন ততবারই নিত্যনতুন আশ্চর্য বিষয় আপনার সামনে উঠে আসবে । ভক্তি যত দৃঢ় হবে ততই পরিস্কার হবে সৃষ্টির রহস্য,ভগবানের মহিমা । এ ব্যাপারে এ পি জে আবুল কালাম, মহাত্মা গান্ধী, শঙ্করাচার্য, আইনস্টাইন প্রমূখ ব্যাক্তিদের অনেক অনুভূতি উল্লেখিত আছে তাদের জীবনীতে। ভগবান জ্ঞানযোগের পরে ভক্তিযোগ এর কথা আলোচনা করেছেন। জ্ঞান ভক্তি বিবর্জিত হলে তাতে অহংকার জন্মে এবং তার পতন নিশ্চিত। ভগবান গীতায় (১১/৫৪) বলেছেন- >a¢-ya TvNaNYaYaa XaKYa AhMaev&ivDaae JauRNa ) jaTau& d]íu& c TatveNa Pa[veíu& c ParNTaPa )) 54 )) “হে অর্জুন! হে পরন্তপ! অনন্য ভক্তির দ্বারাই কিন্তু এই প্রকার আমাকে তত্ত্বত জানতে, প্রত্যক্ষ করতে এবং আমার চিন্ময় ধামে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়।” শঙ্করাচার্য, যিনি ছিলেন শিবের অবতার, তিনি দেখিয়েছেন যে, জ্ঞান দ্বারা ভগবান লাভ হয় না। আপনারা জাকির নায়েকের নাম হয়ত শুনেছেন তিনি বৈদিক শাস্ত্রে জ্ঞাণ অর্জন করেও ভক্ত না হওয়ার কারণে আসুরিক স্বভাব পেয়েছেন। তার প্রমাণ ইতিমধ্যে প্রকাশিত হতে শুরু হয়েছে। তাই ভক্তি বিকল্প নাই বুঝতেই পারছেন।
৩. ইসকন কোন মত/ মতবাদ নয়। এটি কৃষ্ণভাবনামৃত অনুশীলনকারীদের একটা সংগঠন। এটি ভক্তদের গঠিত একটি সংগঠন হলেও এখানে কারও ব্যক্তি দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করা হয় না, প্রচার করা হয় ভগবানের বাণী এবং তা কোন রকম বিকৃতি ছাড়াই। আর মত বা মতবাদ হল মানুষের তৈরি ধারণা মাত্র। ইসকন বৈদিক কৃষ্টি-কালচারের আলোকে মানুষসহ সবজীবকে তাঁদের প্রকৃত কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দেয়। যাতে সবাই প্রকৃত আলয় ভগবদ্ধামে ভগবানের কাছে ফিরে যেতে পারে এবং অন্যকেও তা শিখাতে পারে। ইসকনের মন্দিরগুলো শুধু উপাসনালয় বা আরাধনার স্থানই নয় এগুলো আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বটে। এ প্রসঙ্গে একবার প্রভূপাদকে এক আমেরিকান সাংবাদিক জিজ্ঞসা করেছিলেন যে আপনি এত অল্প সময়ে সারা পৃথিবীতে সনাতন ধর্ম প্রচারে এতটা সফল হলেন কি করে ? প্রভূপাদ বলেন “এর প্রধান কারন হল আমি আমার গুরুদেবের নির্দেশে শাস্ত্র নির্দেশিত ভগবানের বাণীকে তিল পরিমানও বিকৃত না করে সাধারন জনগনের বোধগম্য ভাষায় উপস্থাপন করেছি।”
আর বেদ হল আদি ধর্মগ্রন্থ। কলিযুগের মানুষের বোধগম্যের বাইরে এ বেদ জ্ঞান। তবে আপনি যদি অধ্যয়ণ করে সঠিক উপলিব্ধ করতে চান তবে বৈদিক শাস্ত্রের পুরো ১০০ কোটি শ্লোক না পড়লে বেদের মাথামুণ্ড কিছুই খুঁজে পাবেন না, বরং বিভ্রান্তিতে পড়ে যাবেন। এজন্য চৈতন্য মহাপ্রভু এ কলি যুগে অল্পমেধা সম্পন্ন সাধারণদের বেদপাঠ নিষিদ্ধ করেছেন। তবে ।ধিক মেধাবীরা জানার জন্য পড়তে পারেন, কিন্তু ভগবানের সাথে পরম্পরাধারায় আছেন এমন শুদ্ধ গুরুদেবের তত্ত্বাবধান ছাড়া বিভ্রানিতে পতিত হওয়াই স্বাভাবিক। গীতা এবং ভাগবতম্ বেদের সারাতিসার বা বেদরূপ আম্র বৃক্ষের সুপক্ক ফল এই গীতা / ভাগবতম্ ।
প্রিয় পাঠক বুঝতেই পারছেন ইসকন কোন মত/ মতবাদ নয় । তাই ভেদাভেদ ভুলে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণীকে সার্থক করে তুলতে আগ্রহী হউন এবং প্রচার করুন অভ্রান্ত বেদবাণীকে প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে মহল্লায় ।
রাজেন দাদার সাথে একমত, আমি বিশ্বাস করি যে কোন পোষ্ট পড়ে যে প্রশ্ন টা জাগে তা সেখানে কমেন্টে দিলে আর লেখক যদি তার উত্তর সেখানে দেয় তাহলে লেখার মান ও বারে কেননা ঐ প্রশ্নের বিষয় টা মূল লেখাতে আসেনি আর প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের্উত্তর ও পাওয়া যায়। আর আমি যতটুকু জানি, যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু শুধু নামকীর্তনকেই এই যুগের জন্য পাথেয় করে গেছেন। কিন্তু বেদ পড়া নিষিদ্ধ এটা প্রথম শুনলাম। একটু রেফারেন্স দিবেন কি.....
দাদা, দ্রুত পোস্ট করতে গিয়ে মূল ফাইল থেকে না হয়ে খসড়া ফাইলটি পোস্ট হয়েছিল। কারেকশন দিলাম। "চৈতন্য মহাপ্রভু এ কলি যুগে অল্পমেধা সম্পন্ন সাধারণদের বেদপাঠ নিষিদ্ধ করেছেন। তবে অধিক মেধাবীরা জানার জন্য পড়তে পারেন, কিন্তু ভগবানের সাথে পরম্পরাধারায় আছেন এমন শুদ্ধ গুরুদেবের তত্ত্বাবধান ছাড়া বিভ্রানিতে পতিত হওয়াই স্বাভাবিক।"
মায়াবাদী সন্ন্যাসী প্রকাশানন্দ সরস্বতী একবার চৈতন্য মহাপ্রভুকে সাক্ষাতে যখন বললেন তিনি কেন ব্রাহ্মণ হয়েও বেদ পাঠ করেন না, উত্তরে মহাপ্রভু গুরুদেবরূপী ভক্তের মান বাড়ানোর জন্য বললেন, গুরুদেব আমাকে আদেশ করেছেন যে, মূর্খ তুমি, তোমার নাহিক বেদান্তাধিকার। 'কৃষ্ণমন্ত্র' 'জপ' সদা,-এই মন্ত্র সার ।।৭২।।। -শ্রীচৈতন্য-চরিতামৃত(আদিলীলা,৭ম পরিচ্ছেদ) অর্থ্যাৎ 'তুমি একটি মূর্খ, বেদান্ত দর্শন অধ্যয়ণ করার অধিকার/যোগ্যতা তোমার নেই। তুমি কেবল নিরন্তর 'হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র' জপ কর। এটিই হচ্ছে সমস্ত বৈদিক মন্ত্রের সার।'