আমাদের মধ্য থেকে বেশি মানুষ মনে করে জীবনটাকে একই ভাবে কাটিইয়ে নিতে। এটা মনে হয় কোনো রীতি। আমরা মনে করি সকল কিছুরই শুরু আছে, মধ্য আছে এবং অন্ত কাল আছে। কিন্তু হিন্দু ধর্মে এই রীতি একটু অমিলে থাকে। তারা বিশ্বাস করে সময়ে এবং জীবনের রীতিতে, একই সাথে।
বৃত্তকার সময় এই নিয়মিত সময় আমাদের এখনের দিনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু হিন্দুরা এটাকে অন্যভাবে দেখে। অন্য এক বিশ্বব্রহ্মান্ডের সময় হিসেবে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে চারটি যুগে। এগুলো অনেক অনেক সময় ধরে থাকে। এই চার যুগের নাম- সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ এবং কলি যুগ। এবং এই বিশ্বের জন্য এই বৃত্ত কোনোদিনও শেষ হয় না এবং শুরুও হয়নি। এটা জন্ম নেয়নি শেষ হবার জন্য আবার শেষ হবে না জন্ম নেবার জন্য।
সময় হচ্ছে ঈশ্বর হিন্দুদের সময় সংস্কৃতে কাল বলা হয়। এটা ঈশ্বরের একটা অংশ। এটা শুরু হয় যখন ঈশ্বর সকল কিছুকে চালু করে এবং শেষ হয় যখন তিনি এটা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এবং এটাই হচ্ছে অচল হবার সময়। ঈশ্বর সময়ের বাহিরে। সময় চিরন্তর এবং সকল সময় চলছে, কিন্তু তিনি এটার মধ্যে থাকেন না। অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত তার ভিতরেই আছে।
কালচক্র ভগবান তৈরী করেছেন সময়ে চক্র অথবা কালচক্র। এটা দিয়ে তিনি ভাগ করেছেন এবং সময়কে একটা গর্ণনার মধ্যে রেখেছেন। ভগবান এই সময় ব্যবহার করে জন্ম এবং মৃত্য দেখিয়েছেন। সেখানে বয়স্ক থেকে মৃত্যু আছে তার সৃষ্টিতে। যখন আমরা সময়ের বাহিরে আসব, তখন আমরা মারা যেতে পারবো না। মৃত্যু দিয়ে কিন্তু শেষ হয়না এই চক্রের কারন তারপর আসে পরের জন্ম এবং এটা চলতেই থাকে। এটা আবার সত্যি যে এই বিশ্বব্রহ্মান্ড নিজে একটা রিদমে চল।
হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, সকল মৃত্যুপ্রাপ্ত ব্যাক্তি ৪টি সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়। এই চক্র পুর্ণ হয় যখন এক কল্প শেষ হয়। এক কল্প ১০,০০০ ঐশ্বরিক বৎসর অথবা ১০,০০০,০০০ বছর। এটাকে চার ভাগ করে তৈরী হয়েছে চারটি যুগ।
এই চার যুগের নাম, সত্য যুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ এবং কলি যুগ। সত্য যুগ চলেছে ৪০০০ ঐশ্বরিক বছর ধরে। তারপরে ত্রেতা ৩০০০ ঐশ্বরিক বৎসর। দ্বাপর চলে ২০০০ ঐশ্বরিক বৎসর এবং কলি চলবে ১০০০ ঐশ্বরিক বৎসর ধরে। প্রথম তিনটি চলে গিয়েছে। এই চারটি ভাগ কিসের জন্য করা হয়েছে তা ঠিক বলা যায় না। কারন বৈজ্ঞানিক মতে এটা সত্যি হিসেবে প্রমান হয়নি।
এই চার ভাগে দেখা গিয়েছে কিভাবে মানুষের পরিবর্তন হয়েছে। তাদের নিজেদেরকে ভুলে গিয়ে তারা পাপের দিকে ধাবিত হয়েছে। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস যে পৃথিবীতে ৫ প্রকারের মানুষের শরীর। এগুলো হচ্ছে- অন্নমায়াস্ক, প্রাণমায়াস্ক, মনমায়াস্ক, ভিগনামায়াস্ক এবং আনন্দমায়াস্ক (annamayakosa, pranamayakosa, manomayakosa vignanamayakosa, anandamayakosa) যেগুলোর মানে-
আরেক মতে জানতে পারা যায় যে সত্য যুগে পুর্ণ সত্য ছিলো। ত্রেতাতে ১/৪ হারিয়েছে। তারপর দ্বাপরে ১/২ হারিয়েছে এবং কলিতে ১/৪ বাকি আছে। পাপ দিয়ে পুর্ণ করা হবে এই যুগে।
নমষ্কার দিদি কেমন আছেন? আপনার পোষ্ট টা ভালো লাগলো, তবে কিছু বিষয়ে আপনি ই প্রশ্ন রেখেছেন, আমি যতটুকু জানি শেয়ার করি ১. এটা জন্ম নেয়নি শেষ হবার জন্য আবার শেষ হবে না জন্ম নেবার জন্য। আমরা যে পৃথিবী বা ব্রক্ষ্মান্ডতে বাস করি এটার মত এমন অনেক ব্রক্ষ্মান্ড বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড রয়েছে। প্রতিটি ব্রক্ষ্মান্ডের দায়িত্বে আছেন এক এক জন ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। যখন কোন ব্রক্ষ্মান্ডের সময়কাল শেষ হবে তখন সেই ব্রক্ষ্মান্ড ধ্বংশ হয়ে যাবে। আবার অন্য কোথাও নতুন ভাবে ব্রক্ষ্মান্ড সৃষ্টি হবে। আমরা যে ব্রক্ষ্মান্ডে আছি সেখানের দায়িত্বে আছে চার মাথা বিশিষ্ট ব্রক্ষ্মা, অন্য সকল যায়গায় এর থেকে বেশী মাথার ব্রক্ষ্মাও আছে। তবে একটি ব্রক্ষ্মান্ডের থেকে অন্য একটি ব্রক্ষ্মান্ডের দূরত্ব এতটাই বেশী যে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। এটাই প্রকৃতির নিয়ম, যখন এই নিয়ম ব্যতিক্রমের অবস্থা হবে তখন পৃথিবী ধ্বংশ হবে। মহাবিষ্ণুর প্রতিটি লোমকূপে এক একটি ব্রক্ষ্মান্ড আছে।
২.এই চারটি ভাগ কিসের জন্য করা হয়েছে তা ঠিক বলা যায় না। কারন বৈজ্ঞানিক মতে এটা সত্যি হিসেবে প্রমান হয়নি। ধর্ম বিশ্বাসের জিনিস, এর অনেক কিছুই বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত নয়। যেমন ঈশ্বর আছে এর ই তো কোন বৈজ্ঞানিক প্রমান নেই। আর যুগের কথা , যুগ বিভক্ত করা হয়েছে মানুষের ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালনের ক্ষমতা অনুযায়ী। সত্য যুগে মানুষের মনে যে বিশ্বাস ও শারিরীখ ক্ষমতা ছিল তা এখন নাই। তাই আমরা চাইলেই সত্য যুগের জন্য প্রযোজ্য কোন নিয়ম এই কলি যুগে পালন করতে পারবনা। একটা যজ্ঞ করার জন্য যে যোগ্যতা ও অধিকারের প্রয়োজন আছে তা এই যুগে কয়জনের আছে? তাই কলিতে বিষবিহীন সাপের মত শুধু হরিনাম করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তাতে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি মুক্ত করেন। আমাদের এভাবে নিজেকে মুক্ত করার সামর্থ্য নাই বলে ধরা হয়। যাই হোক অনেক কথা বলে ফেললাম তাও আবার কমেন্টেই। ধন্যবাদ দিদি। এরকম পোষ্ট পেলে অনেক কিছু জানা যায় আবার নিজের টুকুও সবার সাথে শেয়ার করা যায়।