পুরাতাত্তি্বক রহস্যের টানে ব্রিটেন থেকে রাশিয়ায় পাড়ি জমান ইতিহাসবিদ সুন্দরী বেটানি হাগস্। তারপর রাশিয়ার বিখ্যাত পুরাতত্ত্ববিদ গেন্নাদি জানোভিচের সঙ্গে আলাপ জমান এই সুন্দরী গবেষক। রাশিয়ার দক্ষিণ সাইবেরিয়ায় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন হাগস্-জানোভিচ। ভাবা মাত্রই কাজ শুরু করেন। হাগস্-জানোভিচ যুগলবন্দি পেঁৗছে যায় সাইবেরিয়ার স্টেপ অঞ্চলে। তারপর একটা গাড়িতে চেপে বেরিয়ে পড়েন তারা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেপের মাঠ-ঘাট চষে বেড়িয়েছেন। একটানা সাত ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে স্টেপের বিশাল তৃণভূমির নির্জন রাস্তার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে তাদের গাড়িটি। কিন্তু একবারও তাদের মনে হয়নি এই বিস্তৃত তৃণভূমির নিচে ঘুমিয়ে আছে গোটা আর্য সভ্যতা। তবে তাদের গোয়েন্দা নজর থেকে বাঁচতে পারেনি কালজয়ী সেই ইতিহাস। স্টেপের তৃণভূমির তলা থেকে ঠিকই প্রাচীন নগর সভ্যতার অবশেষ খুঁড়ে বের করেছেন হাগস্-জানোভিচ।
তবে, আজ থেকে ২০ বছর আগেই নাকি হারিয়ে যাওয়া এই সভ্যতার সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু তখন রাশিয়ায় ছিল কমিউনিস্ট শাসন। তৎকালীন শাসকরা এই ইতিহাস নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাননি। তাই তো সভ্যতাটি রয়ে গেছিলো ধরা ছোঁয়া বা জানার বাইরে। তাই তো সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এতদিন আড়ালেই ছিল এই প্রাচীন নগরসভ্যতার ধ্বংসাবশেষ। এবার সেই ইতিহাস মানুষের সামনে এলো। অবশ্য হাগসের বক্তব্য, গবেষণা মাত্র শুরু হয়েছে। অনেক তথ্য লুকিয়ে আছে এই স্টেপে। কাজাখস্তান ঘেঁষা প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে এই প্রাচীন সভ্যতার বিস্তৃতি। সাইবেরিয়ার এই অঞ্চলে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার বছর আগে যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, সেখানে বসবাস করতো আমাদের পূর্ব পুরুষরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সভ্যতাটি টিকতে পারেনি। হার মেনেছে কালের স্রোতে। মূলত এই অংশেই বসতি ছিল আর্যদের। এখান থেকেই পরে আর্যরা ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান এমনকি জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়ে। আর্য সভ্যতার উৎস নিয়ে বিস্তর মতবাদ আছে। আছে বহু বিতর্ক। কিন্তু হাগসদের আবিষ্কার পুরো ইতিহাসটাকে নতুন করে চেনাতে চলেছে। হাগসের মতে, এখানকার শহরগুলোর সঙ্গে প্রাচীন গ্রিসের নগরসভ্যতার অনেক মিল আছে। গ্রিসের প্রাচীন নগরগুলোর মতোই সাইবেরীয় সভ্যতার নগরগুলোর আকার। ১৯৮৯ সালে স্টেপে প্রথম যে শহরটির অবশেষ পাওয়া গিয়েছিল সেখানে আরও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। শহরটির নাম আরকেইম। সেখান থেকে যেসব বাসনপত্র ও জিনিস মিলেছে, তাতে স্বস্তিকার চিহ্ন স্পষ্ট। স্বস্তিকা হলো সূর্য ও অসীম জীবনের প্রতীক। আর আর্য সভ্যতার পরিচয়বাহক হলো এই স্বস্তিকা। এই চিহ্নর মাধ্যমে আর্যদের প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে। ভারতীয় উপমহাদেশে এই স্বস্তিকার গুরুত্ব অপরিসীম। হিন্দুদের ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে আষ্টেপৃষ্ঠে এই চিহ্নটি জড়িয়ে আছে। আবার জার্মান নাজিরা নিজেদের আর্য বোঝাতে স্বস্তিকার ব্যবহার প্রচলন করে। ফলে সাইবেরীয় প্রাচীন নগরীতে স্বস্তিকার উপস্থিতি, এ অঞ্চলের আর্যদের প্রাচীন বাসভূমি বলে চিহ্নিত করেছে। আরও একটা মিল পাওয়া গেছে ভারতীয় আর্য সভ্যতা ও সাইবেরীয় প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে। প্রাচীন ভারতে ঘোড়া বলি দেওয়া হতো। তারপর সেই ঘোড়াকে কবরও দেওয়া হতো। ঘোড়ার একই রকম কবর দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে সাইবেরিয়ার স্টেপে। সব মিলিয়ে হাগস্ নিশ্চিত যে রাশিয়াই আর্যদের প্রাচীন বাসভূমি। তবে, এ নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে।
দিদি ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য। এবং এসেই সুন্দর একটা পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আসলেই আমাদের হিন্দু তথা সনাতন ধর্মের যে বিশাল ইতিহাস আছে তা ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে আর ও তথ্য হয়তোবা আমরা পাবো। এ রকম আরো পোষ্ট আশা করছি আপনার থেকে । ধন্যবাদ