Main » 2011»June»10 » শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ থেকে ধারাবাহিকভাবে পাঠ
Added by: Ratan
7:48 PM
শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ থেকে ধারাবাহিকভাবে পাঠ
হরেকৃষ্ণ। আমি এখানে শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক অনুবাদ ও ভাষ্যকৃত ভগবদগীতা যথাযথ থেকে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপনের আশা রাখছি। প্রথমে মুখবন্ধ থেকে আলোচনা তুলে ধরব, তারপর একে একে সংস্কৃত শ্লোক, উচ্চারণ, শব্দার্থ, অনুবাদ শেষে প্রভুপাদ কর্তৃক তাৎপর্য তুলে ধরব। আশা করি যারা ব্যস্ততার কারণে গীতা অধ্যয়ণ করার সময় পায় না তারা সবাই উপকৃত হবেন। ইংরেজীতে শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ কপিটি চাইলে www.iyfbd.com এর ডাউনলোড মেনু থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। হরেকৃষ্ণ।
ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়। শ্রীমদ্ভগবদগীতা যথাযথ
।মুখবন্ধ।
ভগবদগীতার আর এক নাম গীতোপনিষদ্। এটি বৈদিক দর্শনের সারমর্ম এবং বৈদিক সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপনিষদ্। এই গীতোপনিষদ্ বা ভগবদগীতার বেশ কয়েকটি ইংরেজি ভাষ্য ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। তাই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ভগবদগীতার আরও একটি ইংরেজি ভাষ্যের কি দরকার? তাই ভগবদগীতার এই সংস্করণ সম্বন্ধে দুই-একটি কথা আমাকে বলতে হয়। ইদানিং একজন আমেরিকান ভদ্রমহিলা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “ভগবদগীতার কোন্ ইংরেজি অনুবাদে ভগবদগীতার প্রকৃত ভাবকে যথাযথভাবে প্রকাশ করা হয়েছে?” আমেরিকাতে ভগবদগীতার বহু ইংরেজি সংস্করণ পাওয়া যায়, কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি এমন একটি ভগবদগীতা পেলাম না যাতে ভগবদগীতার যথার্থ ভাবকে বজায় রেখে তাঁর অনুবাদ করা হয়েছে। শুধু আমেরিকাতেই নয়, ভারতবর্ষেও ভগবদগীতার ইংরেজি অনুবাদের সেই একই অবস্থা। তার কারণ হচ্ছে ভাষ্যকারেরা ভগবদগীতার মূল ভাব বজায় না রেখে তাঁদের নিজেদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তার ব্যাখ্যা করেছেন। ভগবদগীতাতেই ভগবদগীতার মূল ভাব ব্যক্ত হয়েছে। এটি ঠিক এই রকম- আমরা যখন কোন ঔষধ খাই, তখন যেমন আমরা আমাদের ইচ্ছামতো সেই ঔষধ খেতে পারি না, ডাক্তারের নির্দেশ বা ঔষধের শিশিতে দেওয়া নির্দেশ অনুসারে সেই ঔষধ খেতে হয়, তেমনই ভগবদগীতাকে গ্রহণ করতে হবে ঠিক যেভাবে তাঁর বক্তা তাঁকে গ্রহণ করবার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। ভগবদগীতার বক্তা হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ভগবদগীতার প্রতিটি পাতায় বলা হয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান। ভগবান্ শব্দটি অবশ্য কখনও কখনও কোন শক্তিমান পুরুষ অথবা কোন দেব-দেবীর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়। এখান ভগবান্ শব্দটির দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে মহাপুরুষ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে আমাদের জ্ঞাত হওয়া উচিৎ যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণই যে পরমেশ্বর তা স্বীকার করেছেন সমস্ত সত্যদ্রষ্টা ও ভগবৎ-তত্ত্ববেত্তা আচার্যেরা-যেমন, শংকরাচার্য, রামানুজাচার্য, মধ্বাচার্য, নিম্বাকাচার্য, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আদি ভারতের প্রতিটি মহাপুরুষ। শ্রীকৃষ্ণ নিজেই ভগবদগীতাতে বলে গেছেন যে, তিনিই হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান। ব্রহ্মসংহিতা ও সব কয়টি পুরাণে, বিশেষ করে ভাগবত-পুরাণ শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবানরূপে বর্ণনা করা হয়েছে (কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্)। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেমনভাবে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, ঠিক তেমনভাবে ভগবদগীতাকে আমাদের গ্রহণ করতে হবে। (চলবে...)