মহাভারতের অনুবাদ এবং রজ্মনামাহ্ প্রসঙ্গ সুব্রত কুমার দাস
বিশালাকায় মহাভারত-এর রচয়িতা কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি লেখক নাকি লেখকগোষ্ঠীর নাম সে বিতর্ক অনেক আগ্রহীর উৎসাহের বিষয়। এমনকি বেদব্যাসের জন্মকাল এবং মহাভারতের রচনাকালও বহু বিতর্কের উদ্রেককারী। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সমাপ্তির পর যদি মহাভারত লিখিত হয়ে থাকে তাহলে সেটি কি মহাকাব্যটির বীজ অংশটি মাত্র? আট হাজার আটশ শ্লোকের ‘জয়’ নামের সে বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চবি্বশ হাজার শ্লোকের ‘ভারত’ হয়েছিল যা বর্ধিষ্ণু রূপে লক্ষ শ্লোকের মহাভারত-এ প্রকাশিত, যদিও সুদূর অতীতের অসামান্য প্রতিভাধর সে কবি কিন্তু তাঁর গ্রন্থে জানিয়েছিলেন যে তিনি ষাট লক্ষ শ্লোকের যে পাণ্ডুলিপি রচনা করেছেন সেটির উনষাট লক্ষ বিভিন্ন জগতে বিতরিত, মাত্র এক লক্ষ শ্লোক এসেছে মানব জগতে। তবে বিতর্ক যাই থাক না গ্রন্থটির দর্শন ও মানবমন, ঈশ্বর ও যুদ্ধবিদ্যা, সমাজ ও যৌনরীতি ইত্যাদি সকল বিষয়ে বিশ্বপাঠকের আগ্রহ ক্রমবর্ধিষ্ণু। নতুন ভাষায়, নতুন মাধ্যমে, নতুন আঙ্গিকে মহাভারত অথবা/এবং এর কাহিনিসমূহের অনুবাদ ও নবরূপায়ন চলছে সহস্র বছর ধরেই। বাংলা ভাষাতে গদ্য ও পদ্যে, অনুরূপ এবং সংক্ষেপে, আদিরূপ ও নবকল্পনায় মহাভারত অন্তত শ’ পাঁচেক গ্রন্থের আশ্রয়। ইউরোপিয় সমাজে সে আগ্রহের বৃদ্ধি শ’দুয়েক বছরের মত হলেও মহাভারতের ফারসি অনুবাদ রজ্মনামাহ্ সম্পন্ন হয়েছিল ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট আকবরের নির্দেশ ও উৎসাহে। বাংলা ভাষায় মহাভারতের উপস্থাপন নিয়ে সামান্য ভূমিকা করে আমরা অ-বাঙালি ভাষায় সে মহাগ্রন্থটির প্রসার প্রসঙ্গে যেতে চাই। বাঙালি পাঠকের কাছে মহাভারতের তিনটি অনুবাদ বিশেষ পরিচিত। কাব্যানুবাদে সপ্তদশ শতাব্দির কাশীরাম দাসের মহাভারত বিশেষ গুরুত্বের। মুদ্রিতভাবে সে গ্রন্থটি ১৮০২ সালে শ্রীরামপুর থেকে উইলিয়াম কেরীর (১৭৬১-১৮৩৪) অনুবাদে প্রকাশিত হয়েছিল। অনুবাদক কবি হওয়ায় সে গ্রন্থে মূল মহাভারতের কায়া থাকলেও কাশীরামের ছায়াও কম নয়। পরবর্তীকালে ১৮৬০ এর দশকে একদল পণ্ডিতের সহাযোগিতায় মহাভারতের যে গদ্যানুবাদ তৈরি হয় কালীপ্রসন্ন সিংহের (১৮৪০-১৮৭০) তত্ত্বাবধানে এবং অর্থানুকুল্যে সেটিই গত দেড় শতক ধরে বাঙালি পাঠক সমাজে সবচেয়ে বেশি আদৃত। রাজশেখর বসুর (১৮৮০-১৯৬০) গদ্যে রচিত সারানুবাদটি প্রকাশিত হয় ১৯৪৯ সালে। তবে লক্ষ করার মত যে রাজশেখর বসু যখন আধুনিক পাঠকের সুবিধার্থে সংকোচনের দিকে গেলেন, ঠিক সে সময়েই মহাভারতের টীকাটিপন্নীসহ বাংলা যে বিশাল আরেকটি অনুবাদ প্রকাশিত হয় (১৯২৯-১৯৫০ সালের মধ্যে) সেটির কর্তা হলেন হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ (১৮৭৮-১৯৬১)। ৪৩ খণ্ডের তাঁর মহাভারতম-এর দৈঘর্্য ১৯ হাজার ৫৭২ পৃষ্ঠা। এছাড়াও কবীন্দ্র মহাভারত বা পরাগালী মহাভারত বর্তমান শতাব্দি পর্যন্ত খানিকটা পরিচিত থাকলেও সপ্তদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দি অবধি মহাভারতের আরও যে বহু বহু বাংলায়ন হয়েছে সেগুলো বর্তমানে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসেরই অন্তর্ভুক্ত মাত্র। তবে উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর (১৮৬৩-১৯১৫) ছোটদের মহাভারত (১৯০৯) কিশোর বয়সীদের নিকট অধিকতর গৃহীত। মহাভারত এত সুদুর প্রভাবসৃষ্টিকারী একটি গ্রন্থ যে বাংলা অঞ্চলের ভারতের অন্যান্য অধিকাংশ ভাষাতেই গ্রন্থটির অনুবাদ হয়েছে। কখনো কখনো লেখক নিয়েছেন মাত্রতিরিক্ত স্বাধীনতা আর সে কারণে তাঁর রচনা হয়ে উঠেছে নতুন এক মহাভারত যেখানে চরিত্র বা ঘটনা, উদ্দেশ্য বা সিদ্ধি কোনটাই কৃষ্ণদ্বৈপায়নের সাথে মেলে না। তেমনই এক মহাভারত হলো উরিয়া মহাভারত যেটি সরলা মহাভারত নামে পরিচিত। ১৫শ শতাব্দির কৃষকপুত্র অব্রাহ্মণ সিদ্ধেশ্বর পারিদা দেবীর বরে হয়ে ওঠেন সরল দাস। তিনি যে মহাভারত রচনা করেন সেখানে কিন্তু পঞ্চপাণ্ডব উড়িষ্যার মন্দিরগুলো পরিভ্রমণ করে সে মহাভারতে এমনকি নাকি উড়িষ্যার লোককথাও অন্তর্ভুক্ত। তাঁর মহাভারত তো শুরু হয়েছে জগন্নাথদেব কে স্মরণ করে! তবে উড়িষ্যার এই আদি কবি এতই সেখানে জনপ্রিয় যে তিনি সারা উড়িষ্যা জুড়ে ‘ব্যাস’ নামে পরিচিত। একই শতাব্দির কর্ণাটকের কবি বীর নরনাপ্প যিনি কুমারব্যাস অর্থাৎ ছোট ব্যাস বা ব্যাসের পুত্র নামে পরিচিত। কন্ন্ড় ভাষায় রচিত তাঁর কর্ণাট ভারত কথামঞ্জরী কুমারব্যাস ভারত নামে পরিচিত। ১৪৩০ সালে সমাপ্ত এই মহাভারতে নাকি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের এমন সব বর্ণনা রয়েছে যা বেদব্যাসের মহাভারতে নেই।
অন্যদিকে ইংরেজি ভাষায় পূর্ণ মহাভারতের অনুবাদ ভারতের মাটিতেই হয়েছে। অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগে তেমন উদ্যোগ ইংরেজ কর্তৃক গৃহীত হলেও খুব বেশি সফল হয় নি। ১৭৯৩ সালে চার্লস উইলকিনস (১৭৪৯-১৮৩৬) প্রকাশ করলেও পূর্ণ মহাভারত রচনায় তাঁর উদ্যোগ সফলতার মুখ দেখেনি। তবে উইলকিনসকৃত গীতার অনুবাদটি ওয়ারেন হেস্টিংসের উৎসাহ ও ভূমিকাসহ লন্ডন থেকে প্রকাশ পেয়েছিল ১৭৮৫ সালে উরধষড়মঁব ড়ভ কৎববংযহধ ধহফ অৎলড়ড়হ নামে যা ইউরোপ জুড়ে পণ্ডিত সমাজকে আলোড়িত করেছিল ভারতবিদ্যার বিষয়ে। গীতার উইলকিনসকৃত অনুবাদের ফলে শতাব্দি ঘুরতেই ইউরোপের অন্যান্য ভাষায় গীতার অনুবাদ প্রকাশিত হতে থাকে। আর যেহেতু গীতার মূল আধার মহাভারত তাই সে মহাকাব্যটি বিষয়েও শ্বেতকায়দের আগ্রহ দীর্ঘকালের। কিন্তু তারপরেও পূর্ণ মহাভারত ইংরেজি অনুবাদে এখনও প্রক্রিয়াধীন। দীর্ঘকায় হওয়াটা যে মহাভারতের জন্য দুর্ভাগ্যের ছিল এ ব্যাপারে সে ধারণা বাতুল নয়। কেননা উনবিংশ শতাব্দিতে কৃষ্ণদ্বৈপায়নের অন্যান্য রচনার ইংরেজি প্রকাশ পেলেও কবির প্রধান কীর্তির ইংরেজি রূপের জন্য আমাদেরকে এখনও অপেক্ষমান থাকতে হয়েছে। ভারতীয় অনুবাদকের মধ্যে কিশোরীমোহন গাঙ্গুলী, রমেশচন্দ্র দত্ত, পি লাল এবং কমলা সুবরামানিয়ামের অনুবাদগুলি পাঠকনন্দিত। রমেশচন্দ্রেরটি কাব্যিক হওয়ায় তার দৌড় বিশেষ এগোয়নি। আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বর্তমান যে কাব্যানুবাদ ক্রমপ্রকাশমান তার সমাপ্তি মহান এ গ্রন্থটির বিশ্বব্যাপী আরও বিশাল পাঠক সৃষ্টিতে সাহায্য করবে সন্দেহ নেই। তবে খুবই উদ্দীপক তথ্য যে মহাভারতের আরবি অনুবাদ বেরিয়েছিল ১১শ শতকেই। বাগদাদের খলিফা হারুণ-আর রশীদের পুত্র আল মামুনের রাজত্বকালে তাঁর সভায় দু’জন হিন্দু চিকিৎসকের উপস্থিতি এবং বহু ধর্মীয় সম্মেলন আয়োজনের কথা জানা যায়। সংস্কৃত ভাষার বিভিন্ন গ্রন্থ অনুবাদের উদ্যোগ তাঁর আমলেই নেয়া হয়েছিল। গ্রিস ও ভারত থেকে পণ্ডিতজনদের নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগও করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মহাভারতের বিচ্ছিন্ন অনুবাদ সম্ভব হয়েছিল বলে ধারণা করা যেতে পারে। ১৮৪৫ সালে প্যারিস থেকে ভারত বিষয়ক আরবি ও ফারসি লেখাবলীর যে ফরাসি অনুবাদ প্রকাশিত হয় তার একটির শিরোনাম ছিল এমন ্তুঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঃযব শরহমং ড়ভ ওহফরধ ধহফ ঃযবরৎ পযৎড়হড়ষড়মরপধষ ড়ৎফবৎ ধপপড়ৎফরহম ঃড় ঃযব রহভড়ৎসধঃরড়হ যিরপয যধং পড়সব ঃড় ড়ঁৎ শহড়ষিবফমব্থ । কাম্পিয়ান সাগর তীরবর্তী জুরজান শহরে অবস্থিত লাইব্রেরির কিপার আবুল-হাসান-আলিকৃত সে অনুবাদে মহাভারতের কাহিনির ছায়া সুস্পষ্ট বলে বিজ্ঞজনেরা অভিমত দিয়েছেন। রাজসভায় বহু ধর্মের প্রতি উদারতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ণ বিশ্বনন্দিত যে মুসলমান সম্রাট তিনি মোঘল রাজ জালাল উদ্দিন মোহম্মদ আকবর (১৫৪২-১৬০৬)। সম্রাট আকবরের আমলে যে ১৫টি সংস্কৃত গ্রন্থ ফারসিতে অনুবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয় সেগুলির মধ্যে মহাভারত অন্যতম। গ্রন্থটি অনুবাদকের দায়িত্বে আব্দুল কাদের বাদাউনির সাথে আরও ছিলেন নকিব খান, শাইখ সুলতান হাজী থানেশ্বরী এবং মোল্লা সেহরি। যে সকল সংস্কৃতজ্ঞকে ফারসি পণ্ডিতদের সহযোগিতার জন্য রাখা হয়েছিল তাঁরা হলেন দেবী মিশ্র, মধুসূদন মিশ্র, রুদ্র ভট্টাচার্য প্রমুখ। বাদাউনির লেখা থেকে জানা যায় ১৫৮২ সালে সম্রাট আকবর তাঁর সভাসদদের উন্নয়নের প্রয়োজনে দর্শন ও ইতিহাস আশ্রিত গ্রন্থ মহাভারতের অনুবাদের প্রয়োজন উপলব্ধি করেন। বাদাউনি অনুবাদ করেছিলেন ১৮ অধ্যায়ের দুটি। মোল্লা সেহরি এবং নকিব খান করেন কিছুটা করে এবং বিশাল বাকি অংশ হাজী সুলতান অনুবাদ করেন। বাদাউনি নিজেই জানিয়েছেন যে গ্রন্থটি প্রকৃতপক্ষে অনুবাদ ছিল না; বরং ছায়ানুবাদ ছিল। ১৫৮৪ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর নাগাদ অনুবাদ কর্মটির প্রথম খসড়া সমাপ্ত হয়। পরে এটিকে কালিওগ্রাফিস্ট দিয়ে অনুলিপি করানো হয় যার ভূমিকা লেখেন মনিষী আবুল ফজল। আকবরের সভার বিশিষ্ট শিল্পীরা গ্রন্থের অলংকরণ করেন। সম্রাট আকবরের জন্য মহাভারত গ্রন্থের যে অনুবাদ প্রস্তুত করা হয়েছিল তাতে অন্তর্ভুক্ত ছিল ১৬৮টি চিত্র। চার খণ্ডে বাধাই সে গ্রন্থ সম্রাট সমীপে উপস্থাপন করা হলে তিনি নামকরণ করেন রজ্মনামাহ্ বা ‘যুদ্ধের ইতিহাস’। মহামতি আকবরের জন্য নির্মিত লক্ষ শ্লোকের রজমনামাহ্-র কপিটি ১৭৪০ সালের দিকে জয়পুরের মহারাজের হস্তগত হয়ে জয়পুর শহরের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত হয়েছে। কিন্তু আইনগত জটিলতার কারণে সেটি যদিও সর্বসমক্ষে প্রদর্শনের যোগ্য হয়ে ওঠেনি এখনো। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইংরেজি ভাষায় বাঙালি লেখক প্রদীপ ভট্টাচার্যের লেখা দেখতে এই ওয়েব পেইজটি ব্রাউজ করা যেতে পারে যঃঃঢ়://সধযধনযধৎধঃধ-ৎবংড়ঁৎপবং.ড়ৎম/ড়ষধ/ধৎধনরপথসনয.যঃসষ। সম্রাট আকবর তাঁর সভাসদদের রজ্নামাহ্ পাঠের নির্দেশ দিয়েছিলেন যার কারণে ১৫৯৮-৯৯ সালে কম সৌকর্যের একটি রাজমনামাহ্র সংস্করণ প্রস্তুত করা হয়েছিল। চিত্রসম্বলিত সে সকল রজ্মনামাহ্র কপি পরবর্তিতে হারিয়ে যায় ভারতবর্ষীয় রাজনীতিতে পরবর্তি মোঘল শাসকদের সামপ্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। আর তাই অনুমান করা যায় রজ্মনামাহ্র সে সকল পৃষ্ঠাগুলো ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে যেগুলোকে একত্রে জোড়া লাগানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই জন ফ্রেডারিখ লুইস কালেকশান রজ্মনামাহ্-র ২৫ টি পৃষ্ঠা ইতোমধ্যে সংগ্যহ করেছে যা নিয়ে তারা ২০০৭ সালে ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অব আর্টে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। তবে রজ্মনামা্ জৈমিনির মহাভারতকে আশ্রয় করে রচিত। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে জৈমিনির মহাভারত নামে মহাভারতের একটি সংস্করণ ভারতের অনেক অঞ্চলে প্রচলিত আছে। সে মহাভারতের রচয়িতা মহর্ষি জৈমিনি যিনি ছিলেন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য। বেদ চার ভাগে ভাগ করার দায়িত্ব যে চারজন মুনিকে দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে পৈইলা, বৈশম্পায়ন ও সমান্তুর সাথে জৈমিনিও ছিলেন। তাঁর ভাগে পরেছিল সামবেদ। কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের মুখে অন্যান্য শিষ্যদের সাথে জৈমিনিও মহাভারতের শ্রোতা ছিলেন। পরবর্তিতে মহাভারতের কাহিনির কিছু ব্যাপারে জৈমিনির মধ্যে সংশয় জন্মে। বেদব্যাস তখন উপস্থিত না থাকায় জৈমিনি আশ্রয় নেন মার্কণ্ডেয় মুনির যাকে আমরা মহাভারতের একটি চরিত্র হিসেবেও পাই।আর তাই জৈমিনি কথিত মহাভারত খানকটা হলেও ভিন্ন হয়েছে বৈশম্পায়নের মহাভারত থেকে যেগুলো আমরা বাংলা ভাষায় পড়ে থাকি। উল্লেখ করা যেতে মার্কণ্ডেয় মুনি ও জৈমিনির কথোপকথনে গড়ে উঠেছে মার্কণ্ডেয় পুরাণ। ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ইউরোপের ভাষায় মহাভারত বলতে শুধুমাত্র ইংরেজি মহাভারতকেই বোঝাত। তবে সারানুবাদে মহাভারত ইউরোপের অধিকাংশ ভাষাতেই লভ্য ছিলো দীর্ঘকাল ধরেই। রাশিয়ান ভাষায় সে মহাভারতের অনুবাদ হয়েছে ১৯৫০ থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যে ভি. আই. কালিয়ানভ কতর্ৃক। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ার্স থেকে স্প্যানিশ মহাভারতও বেরিয়েছে সমপ্রতি। আর ফরাসি অনুবাদে জঁ্যা ক্লদ ক্যারিয়েরের মহাভারতই তো পিটার ব্রুকের নয় ঘন্টার সিনেমার উদগাতা। হলিউডের ব্রুককৃত সে সিনেমা যাঁরা দেখেছেন তাঁদের বোধদয় হয়েছে যে মহাভারত কত বেশি মাত্রা গ্রহণে সক্ষম। পিটার ব্রুকের সিনেমাই উৎসাহিত করেছে জাপানি লেখক আজুমি কুবোতাকে যাঁর নাটক মহাভারত-নিলচরিতম্ পরিচালনা করেছেন সাতোশি মিয়াগি। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জেমস্ এ ফিটজেরাল্ড বর্তমানে তাঁর অধ্যাপক জে এ বি ভন বুইটেনেন এর অসমাপ্ত অনুবাদকর্ম সমাপ্ত করছেন। হয়তো ফিটজেরাল্ডের অনুবাদ যখন বাজারে আসবে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস বিশ্বজুড়ে নন্দিত হবেন আরও মহান সাহিত্যকার হিসাবে।
দিদি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে active দেখে ভাল লাগছে। আশা করি এমন ভাবেই পাব আপনাকে। bcz site টাতো আপনার ও । হা হা হা । :D :D একটা কথা শুনেছিলাম "যা নাই মহাভারতে তা নাই ভারতে" আবার শুনেছিলাম বেদব্যাস এর অনুরোধে সিদ্ধিদেবতা গণেশ নাকি মহাভারত লিখে দিয়েছিলেন তবে শর্ত ছিল উনাকে বসিয়ে রাখা যাবেনা। এসব আমি বিশ্বস না করলে ও এটা মানি মহাভারতে অনেক অনেক কিছু আছে। যাই হোক আবার ও ধন্যবাদ
nastik! tar jothestha alamat ache articles e. Vedabyas ba Krishna er theke beshi janar bhab. abar admin dekhi kisu biswas kore na, tobe eta "যা নাই মহাভারতে তা নাই ভারতে" আবার শুনেছিলাম বেদব্যাস এর অনুরোধে সিদ্ধিদেবতা গণেশ নাকি মহাভারত লিখে দিয়েছিলেন তবে শর্ত ছিল উনাকে বসিয়ে রাখা যাবেনা।" 100% thik. e bapare pore lekha dibo
Ratan আপনাকে স্বাগত । আপনাকে site এ active দেখে অনেক ভাল লাগছে। বুঝতে পারছি আপনার মাঝে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান আছে। আপনার মত মানুষকে এই সাইটে পেয়ে আমরা গর্বিত। হিন্দু ধর্ম নিয়ে আপনার মতামত ও দর্শন জানার জন্য অধীর আগ্রহে আছি। আর হ্যা সবার দর্শন কিন্তু একরকম না। এক একজন একটা ব্যাপারকে এক এক ভাবে দেখে । আমি যতটুকু বুঝি তাই আমার ধর্ম, এর বাইরের কিছু আমি বুঝার চেষ্টা করি কিন্তু যদি তা বুঝতে না পারি তবে যত বড় কিছুই হোকনা কেন আমি মানিনা। হ্যা যদি কখনও বুঝতে পারি তবে নির্দিধায় মেনে নেব। আশা করি এগুলো নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে।