বরিশালে শারদীয় দুর্গোৎসব : ৫ শত ১২টি মন্দিরে সাজ সাজ রব - 23 September 2011 - হিন্দু ধর্ম ব্লগ - A Total Knowledge Of Hinduism, সনাতন ধর্ম
Hinduism Site
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলে বরিশালের সর্বত্রই এখন সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। নগরীসহ জেলার বিভিন্ন মন্দিরে রঙ-বেরঙের আলোকসজ্জার পাশাপাশি সুদর্শনীয় তোড়ন নির্মাণের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। জানা গেছে, বরিশাল জেলায় সর্বাধিক ৫ শত ১২টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর মধ্যে নগরীতে ২৭টি, সদর উপজেলায় ১৭টি, উজিরপুরে ৯০টি, বাবুগঞ্জে ১৮টি, আগৈলঝাড়ায় ১৩০টি, গৌরনদীতে ৭৫টি, বানারীপাড়ায় ৪১টি, মুলাদীতে ১২টি, হিজলায় ১৩টি, মেহেন্দিগঞ্জে ১৩টি ও বাকেরগঞ্জে ৭৬টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিলো ৪ শত ৪৭টি ।এদিকে পূজা উপলে মহানগরীর ৩০টি মন্ডপে ও সার্বজনীন ২৪টি মন্ডপে ১২ হাজার করে, ব্যক্তিগত ৬টি মন্ডপে ৭ হাজার করে এবং সদর উপজেলার ১৭টি মন্ডপে ৭ হাজার করে নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এডভোকেট শওকত হোসেন হিরন ৫ দিনব্যাপী সার্বজনীন দুর্গোৎসব পালনে বরিশাল নগরীর ৩১টি পূজামন্ডপ আলোকসজ্জা, তোরন নির্মাণ ও বিভিন্ন রঙে আকর্ষনীয় ভাবে সাজানো হয়েছে, আলোকসজ্জায় চলছে প্রতিযোগীতা। বাজার রোড, সদর রোড, হাসপাতাল রোড, কালীবাড়ী রোড, রামকৃষ্ণ মিশন, শংকরমঠ, ভাটিখানা, দপ্তরখানা, কাউনিয়া, সাগরদী, নতুন বাজার, ঝাউতলা, স্ব-রোড, ফলপট্টি, কাটপট্টি, চকবাজার, কাশিপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা নির্মাণ শেষ করে রং তুলির শেষ আচড় লাগাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। পূজার কেনাকাটাও চলছে পুরোদমে। দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে মার্কেট গুলোতে তাই উপচেপড়া ভীড়। মন্ত্রের শৈল্পিক রূপায়ন এই প্রতীমা যা গুণরাজের হাত আর শিল্পীর তুলিতে ফুটে ওঠে এবং যা মন্ডপে আমরা দেখতে পাই। আজ স্বল্প পরিসরে দুর্গাদেবীর শুধু একটি কাঠামোর ব্যাখ্যা করে দেখা যাক। দুর্গা পশু অসুর সমেত এ কাঠামোর সর্ব উপরে দশভুজা দুর্গা, তারপরে রয়েছে পশুরাজ সিংহ, তারপরে আছে অসুর। দেবী দুর্গা দশ হাত দশদিক অর্থাৎ সর্বদিক নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি শুভ শক্তির প্রতীক, পশুকুলের শ্রেষ্ঠ পশুরাজ সিংহ পাশবিক প্রতীক যা দেবীর পরে অবস্থিত এবং শুভশক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এটি শুভশক্তির প্রহরীও বটে। সবশেষে অসুর অশুভশক্তির প্রতীক যা প্রহরী বা পশুশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাহলে দেখা যায়- বাস্তব সমাজে দুর্দান্ত অসুরশক্তি বা অশুভশক্তি কেবলমাত্র পশুশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় যদি তা শুভশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সনাতন ঋষি-মহর্ষিগণের এই চিরন্ত্রণ দর্শনকে প্রতিফলিত করতে হবে। আমাদেরকে একাগ্রচিত্তে শুভশক্তির আরাধনা করতে হবে। শুভশক্তির আশীর্বাদ অর্জিত হলেই পশুশক্তি আর অসুরশক্তি আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাই এখনই এই দেবী শুভমহালগণে সময় এসেছে, প্রকৃতি পুলকিত আকাশে বাসাতে ধ্বসিত হচ্ছে আগমনীর শুভ আগমন। দূর্গাপূজা চলাকালে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ এ উৎসবকে সুষ্ঠু ও সুশৃংখলভাবে আয়োজনে প্রশাসনিক ভাবেও নেয়া হয়েছে ব্যাপক উদ্যোগ। প্রতিটি পূজা মন্ডপে ধর্মীয় স¤প্রীতি ও আইন-শৃংখলা রার্থে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি র্যাব সদস্যদের টহল জোরদারেরও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।