পূর্ণিমা ধর্ষণ এবং আল্লাহর মোমিন বান্দাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার - 18 September 2011 - হিন্দু ধর্ম ব্লগ - A Total Knowledge Of Hinduism, সনাতন ধর্ম
Hinduism Site
পূর্ণিমা ধর্ষণ এবং আল্লাহর মোমিন বান্দাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার
ফেসবুকে Hidden Truth নামে একটি ইসলামী উগ্রবাদীদের পেজে নিচের লেখাটি পরে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলঃ
”সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে মিডিয়াতে রঙ মাখিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছেন। এই বিষয়ের উপর প্রামাণ্য চিত্র এই তিনটি ভিডিওতে দেখুন আপনারা। কিভাবে ঘাদানিক(ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি) শাহরিয়ার কবীর ২০,০০০টাকা পূর্ণিমা নামের একটি মেয়েকে দিয়ে সঙ্খ্যালঘু নির্যাতনের ফাদ পেতেছিল দেশের সুশীল মিডিয়াগুলোসহ বিদেশী মিডিয়াগুলোতেও। শুধু পূর্ণিমা নয় আরো অনেকের নামেই এই সঙ্খ্যালঘু নির্যাতনের কল্পকাহিনী প্রচার করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে ছোট করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশের একটি বুদ্ধিজীবী মহল সুশীল মিডিয়াগুলোসহ বিদেশী মিডিয়াগুলোতেও বছরের পর বছর ধরে।“
ইসলামী জঙ্গিরা যে মিথ্যাচার করে বেড়ায় তা আগেও দেখিয়েছি। কিন্তু এই ধরণের মিথ্যাচার! পূর্ণিমা ধর্ষণ ছিল ২০০১ এর নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের উপর মুসলিম জানোয়ারদের সহিংসতার এক জ্বলত উদাহরণ। একে এরা কল্পকাহিনী বানাতে চায়।
"ছবিটি অনেকে দেখেছেন, জনকণ্ঠ বা সংবাদের পাতায়। সংবাদের প্রথম পৃষ্ঠার ঐ ছবিটি পূর্ণিমার, যখন চোখে পড়ল সকালে, তখন আপনা-আপনি চোখে পানি চলে এলো। কিন্তু কেন? এত বছর_ এত বিপর্যয়, এত হুমকির মুখেও তো কখনও বিপর্যস্ত বোধ করিনি। খানিকপর অনুধাবন করলাম, আমার বা আমাদের বন্ধুদের অনেকের তো একটি পূর্ণিমার বয়সী এবং আমি ভেবেছিলাম, এ ছবিটি তো আমার মেয়েরও হতে পারত, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে বেঁচে ছিলেন, তাঁদের অনেকে সমষ্টিগত ডিপ্রেশনে ভুগছেন। পূর্ণিমার একটি ছবি মুখঢাকা দু'হাত দিয়ে কিন্তু কী সাহস, এসে হাজির হলো আমাদের সামনে, যেন চড় মেরে গেল বাংলাদেশকে। আমরা কেউ তা বুঝি না.... ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরেও দৈনিক পত্রিকায় ঠিক এমন একটি ছবি বেরিয়েছিল। মুখঢাকা এক কিশোরীর। সে ছবি দেখেও অনেকে কেঁদেছিল। পাকি কর্তৃক ধর্ষিত বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ছবি। কোন অমিল নেই ছবি দু'টির।...." অমিল না থাকার কারণ তখন ছিল পাকি ও তাদের সহযোগী জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগের পাকি-বাঙালীরা। তখন (২০০১-০৬) পাকিরা না থাকলেও ছিল তাদের সহযোগীদের উত্তরসূরিরা, যাদের সমষ্টিগত নাম বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী ঐক্যজোট প্রভৃতি। পাকিরা ইসলামের নামে ৩০ লাখ হত্যা ও ১০ লাখ ধর্ষণ করেছিল। ২০০১-০৬ সালে পাকি-বাঙালীরা ঐ পরিমাণ না হলেও খুন-ধর্ষণ কম করেনি, যার একজন ছিল ১৩ বছরের হিন্দু বালিকা পূর্ণিমা শীল। তারাই এ বিএনপি-জামায়াত- জাতীয় পার্টি সংবিধানে 'বিসমিলস্নাহ' ও 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' করেছিল। এবং ইসলামের নামে বিসমিলস্নাহ বলে আওয়ামী লীগ, অসাম্প্রদায়িক মানুষ আর সংখ্যালঘুদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিধর্মী বলে।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ৮ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় জোট সরকারের নেতাকর্মীরা আনন্দ উলস্নাসের অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়ার পূর্বদেলুয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী পূর্ণিমা রানীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করে। (ভোলায় একটি গ্রামের ৭০টি মেয়েকে নিয়ে তা-ব করেছিল এ মুসলমানরা। আমাদের বাংলাদেশের সুশীল সমাজের মুসলমানরাও তখন ভেবেছিলেন হিন্দুরা হচ্ছে গনিমতের মাল।কয়েকদিন পর যখন মুসলমান মেয়েদেরও তুলে নিতে লাগল তখন সুশীল মুসলমানরা শঙ্কিতবোধ করেছিলেন। ) যাক, ঘটনাটি এবং এ ঘটনাগুলো সংবাদপত্র ও মিডিয়া তখন প্রায় বস্ন্যাকআউট করে দিয়েছিল। সিরাজগঞ্জের ইত্তেফাকের প্রতিবেদক আমিনুল ইসলাম যিনি যুক্ত ছিলেন নিমর্ূল কমিটির সঙ্গে তখন এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট করেন এবং শাহরিয়ারকে জানান। ইত্তেফাক রিপোর্টটি ছেপেছিল ১৬ অক্টোবর। শাহরিয়ারের নেতৃত্বে নিমর্ূল কমিটির দল চলে যায় উলস্নাপাড়া পূর্ণিমাদের বাসায়। সেখানে সরেজমিনে তারা সব দেখে। অবস্থা তখন খুবই প্রতিকূল। নিমর্ূল কমিটির পৰ থেকে পশুরূপী মানুষদের বিরম্নদ্ধে লড়াই চালিয়ে নেবার সিদ্ধানত্ম হয়। পূর্ণিমার পরিবার এতে সম্মতি জানায়। এ লড়াইয়ে তাদের ওপর আবারও জুলুম হতে পারে, এ কথা জানানো হলে পূর্ণিমার মা জানান, আমাদের তো সব গেছে আর কী যাবে? শাহরিয়ার তখন পূর্ণিমাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। অবস্থা কেমন ছিল তার একটি উদাহরণ দিই। ফেরার ঠিক আগের মুহূর্তে শাহরিয়ার জানতে পারেন যে, পরিবারটি তিন দিন ধরে উপোস আছে। তখন সবার কাছে যা ছিল তার পুরোটা পরিবারটিকে দিয়ে আসেন। বাসায় ফেরার পর শাহরিয়ারের মেয়ে যার বয়স তখন পূর্ণিমার থেকে খানিকটা বেশি_ সে জানায় যে, বিএনপির মানুষজন বিসমিলস্নাহ বলে যা করেছে তা বলার নয়। মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন অংশ তারা খুবলে নিয়েছে। নিমর্ূল কমিটির উদ্যোগে পরের দিন প্রেস কনফারেন্স হয়। এক পর্যায়ে চোখে হাতচাপা দিয়ে পূর্ণিমা কেঁদে ফেলে। সে ছবিটিই ছেপেছিল সংবাদ, জনকণ্ঠ। ঐদিন বিদেশী সাংবাদিকরাও দেখেছিল রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের নামে এবং বিসমিলস্নাহ বলে খালেদা অনুসারীরা কী করেছিল, অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। পরের দিন সারা দেশ তো বটে, বিদেশীরাও জেনে যায় দেশটিতে কী হচ্ছে? ২০০১-০৬ পর্যনত্ম এ রকম অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এখানে বলে রাখি, আজকে যাঁরা সুশীল সমাজের প্রবক্তা, গ্রামীণ ব্যাংকের দুঃখে যাঁরা কাতরাচ্ছেন তাঁদের একজনও এগিয়ে আসেননি। এসেছিলেন একজন তিনি ওয়াহিদুল হক। 'পূর্ণিমা যাত্রা' নাম দিয়ে তিনি সিরাজগঞ্জ গিয়েছিলেন। তার কথা আসবে পরে।"- মুন্তাসির মামুন।
এ নিয়ে প্রথমে পূর্ণিমার বাবা অনীল চন্দ্র শীল ১০ অক্টোবর উলস্নাপাড়া থানায় মামলা করে। আসামি করা হয় ১৭ জনকে। কিন্তু সকল আসামি বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী হওয়ায় পুলিশ মামলা নিয়ে নানা তালবাহানা করে। পরে ২৪ অক্টোবর পূর্ণিমা রানী বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (১)/১০(১)/৩০ ধারায় মামলা করে। এর পরে আদালতের আদেশে পুলিশ পূর্ণিমাকে নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা করায়। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের ভয়ঙ্কর চিত্র ফুটে ওঠে। উলস্নাপাড়া থানা পুলিশ মামলার তদনত্ম শেষে ২০০২ সালের ৯ এপ্রিল আদালতে ১৭ জনকে আসামি করে চার্জশীট প্রদান করে। কিন্তু মামলা শুনানি চলাকালে তৎকালীন জোট সরকারের এমপি আকবর আলী মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে। আদালতের নথিপত্রের চেহারাও পাল্টে দেয়ার অপকৌশল করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মামলার বর্ধিত তদনত্মের আদেশ দেয়া হয়। এ আদেশ পেয়ে সিআইডির তৎকালীন ইন্সপেক্টর শেখ শহীদুলস্নাহ সম্পূূরক চার্জশীট প্রদান করে। এতে মূল আসামিদের রেখে পূর্ণিমাকে সহায়তাকারী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি (বর্তমান প্রয়াত) আব্দুল লতিফ মির্জা, এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, তৎকালীন পৌর মেয়র মারম্নফ বিন হাবীবসহ ৬ জনকে আসামির অনত্মভর্ুক্ত করা হয়। তবে মামলার বাদী পূর্ণিমার বাবা অনিল শীল এই সম্পূরক চার্জশীটে না রাজি পিটিশন দাখিল করে। এমনই অনেক আইনী লড়াই শেষে ২০০৭ সালের নবেম্বরে মামলা মূল ধারায় ফিরে আসে। বাতিল হয়ে যায় সম্পূরক চার্জশীট। মূল আসামিরা জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়। বিচারিক আদালত থেকে ৬ এজাহারভুক্ত আসামির অব্যাহতি দেয়াদীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর ২০১০ সালের মার্চ মাসে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালে এজাহারভুক্ত ১৭ জন আসামির মধ্যে ১১ জনের বিচার শুরম্ন হয়। বাকি ৬ জনকে এর আগে বিচারিক আদালত থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালের ১৬ মার্চ পূর্ণিমা রানী সিরাজগঞ্জে এসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক ওসমান হায়দারের কাছে তার জবানবন্দী প্রদান করে। জবানবন্দীতে পূর্ণিমা রানী মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নাম উলেস্নখ করে কিভাবে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অকথ্যভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তার বিসত্মারিত বর্ণনা দেয়। তবে মামলা চলাকালে আদালত থেকে ৬ আসামিকে অব্যাহতি দেয়ায় পূর্ণিমা অসনত্মোষ প্রকাশ করে।
সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওসমান হায়দার ৪ মে বুধবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় প্রদান করেন। মামলার রায়ে অভিযুক্ত ১১ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। একই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এই টাকা পূর্ণিমাকে প্রদানেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে রায়ে। এ সময় দ-প্রাপ্তদের মধ্যে ৬ জন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিল। ৫ জন ছিল অনুপস্থিত। রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষ ছিল নীরব নিস্তব্ধ। বিচারক রায় পাঠ করে এজলাস ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে আদালতের পরিবেশ পাল্টে যায়। দ-প্রাপ্ত আসামি ও তার পরিজনের কান্নার রোল পড়ে। পূর্ণিমার পরিবার এই রায়ে সনত্মোষ প্রকাশ করেছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে পূর্ণিমা অভিমত ব্যক্ত করেছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছিল এ রায়ের মধ্য দিয়েই তা প্রমাণিত হলো। দ-প্রাপ্ত আসামিরা হলো- আব্দুল জলিল (৪০), আলতাফ হোসেন আব্দুল মোমিন, জহুরম্নল ইসলাম হোসেন আলী, লিটন সেখ ইয়াছিন আলী আব্দুর রউফ আব্দুল মিয়া (২৮), বাবলু মিয়া ও আলতাফ হোসেন, আব্দুল মোমিন, আলতাফ (২), জহুরম্নল ইসলাম, আব্দুল মিয়া ও বাবলু মিয়া। এদের মধ্যে ৫ জন পলাতক রয়েছে। দ-প্রাপ্তরা সকলেই উলস্নাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের পূর্বদেলুয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বিএনপি দলীয় স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী। মামলা চলাকালে ৩ তদনত্ম কর্মকর্তা, ১জন চিকিৎসকসহ মোট ১২জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
এত কিছু পরেও যেই জানোয়াররা এই ঘটনাকে অস্বীকার করে তাদের জন্ম পরিচয় নিয়েই সন্দেহ হয়।
এরা পাকিস্তান হতে হিন্দুদের এবং ইরাক থেকে খ্রিস্টানদের মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন নিজেরা নিজেরা মারামারি করে মরছে। দেখেন না নিজের মসজিদে নিজেরাই বোমা ফাটায়। এই জাতের মুক্তি নাই।