এ যুগের মনসাকে দেখতে বরিশালের গৌরনদীতে ছুটে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হিন্দু সমপ্রদায়ের এক নারীর মাথায় হঠাৎ একটি জাতি সাপ উঠে বসে। আবার মাথা থেকে সাপটি মাটিতে নেমে নিজের শরীর নিজে কামড়ে মাটিতে গড়াতে থাকে। উপজেলার সুন্দরদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে অবিশ্বাস্য এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতভর ও গতকাল উৎসুক হাজার হাজার মানুষ ভিড় করে। উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দিতে ওই বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হযেছে। মনসা পূজা করা ওই নারী এখন পূজা মন্দিরে সাপটি পুষছেন। সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত আরতি রানীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ মাস আগে মনসা দেবতা ওই উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের গোপাল পোদ্দারের স্ত্রী আরতি রানীকে (৪৫) স্বপ্নাদেশ দেয় প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা মনসা পূজা দেয়ার জন্য। স্বপ্নাদেশ পেয়ে আরতি রানী নিজের বাড়ির মন্দিরে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা মনসা পূজা দিয়ে আসছিলেন। মাঝে-মধ্যে দু’-একদিন সে পূজা-অর্চনা করতেন না। শুক্রবার সন্ধ্যায় আরতি রানী পোদ্দার তার বসত ঘরের বারান্দায় বসে পাটায় ডাল বাটছিলেন। এ সময় তার পিছন দিক থেকে পিঠ বেয়ে তিন ফুট দৈর্ঘ্যের একটি জাতি সাপ মাথায় উঠে। জাতি সাপটি আরতির মাথার চুলের জটে একাধিকবার ছোবল মারে। একপর্যায়ে জাতি সাপটি মাটিতে নেমে নিজের শরীর নিজে কামড়াতে থাকে। এ সময় আরতির ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে সাপের ওই দৃশ্য দেখেন। তখন আরতি সাপটিকে ধরে বাড়ির মন্দিরে নিয়ে পূজা অর্চনা ও কান্নাকাটি করে মনসার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। বর্তমানে সাপটি আরতির বাড়ির মন্দিরের প্রতিমার সঙ্গে রেখে পুষছেন। এ খবর এলাকায় জানাজানি হলে মুহূর্তের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের অসংখ্য নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ওই বাড়িতে স্বাপ্নাদেশ প্রাপ্ত আরতি রানীকে ও বিষধর সাপটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় করছেন। গতকাল শনিবার দিনভর ওই বাড়িতে হাজার হাজার উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মোস্তফা সরদার, প্রতিবেশী ও প্রত্যক্ষদর্শী ইউনুস সিকদার, লিটন হাওলাদার, শেখর দত্ত বণিক, শ্যামল বণিকসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আরতি রানীর চিৎকার শুনে আমরা তার বাড়িতে যাই। আরতির ঘরের বারান্দার মেঝেতে প্রায় তিন ফুট দৈর্ঘ্যের একটি জাতি সাপ গড়াগড়ি করছে। পরবর্তীতে আরতি রানী সাপটিকে হাত দিয়ে ধরে তার বাড়ির আঙ্গিনার মন্দিরে রাখেন। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই বাড়িতে উৎসুক জনতা ভিড় সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।