#পূর্ণিমা আমায় যে ধরে হাল। তার দুঃখ
সর্বকাল।। তার বলদের হয় বাত। ঘরে তার থাকে না ভাত।। খনা বলে আমার বাণী। যে চষে তার হবে হানি।।
-এই বচন বুঝিয়ে বলার প্রযোজন নেই
মনে করছি। তবে এর তাৎপর্যটুকু গুরুত্বপূর্ণ। গ্রহ নক্ষত্রের বিশেষ অবস্থান প্রাণী জগতের ওপর পড়ে, একথা আধুনিক জ্যোর্তিবিদ্যাও অস্বীকার করে না। এই সম্পর্কিত আলোচনায় পরে যাওয়া যাবে। তবে এই
বচনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৬% কৃষক। এবং
এখানে একটি বিষয় আলোচনা হওয়া জরুরি আমাদের গ্রামের সংস্কৃতিতে অতীত কোন ঘটনার রেশ
পরম্পরায় থেকে যায়। ফলে হয়তো এমন কোন ঘটনা ঘটেছিল -যা খনার এই
বচনের পক্ষে রায় দেয়। এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখ্য খনার বচনের
বিপক্ষে যে সমস্ত কৃষক রায় দিয়েছেন তাদের কৃষিজ ঐতিহ্য নেই। অর্থাৎ
তারা পূর্বে অন্য কোন পেশায় ছিলন কিন্তু এখন কৃষিকাজে সম্পৃক্ত। এখানে আরো কিছু বচন উল্লেখ করা যায়।
#ন’খানা ছ’খানা ভাগ্যে পাই। সাতের কাছেতেও না যাই।।
-গরুর দাঁত সাত হলে ভালো না। কুমিল্লায় ৯৮% কৃষক সাত দাঁতওয়ালা গরুকে খারাপ বলেছেন। এরকম আরেকটি আছে-
#জাতের গরু জিহ্বা কালা।
আরো কিছু বচন-
#লাউ গাছে মাছের জল। ধেনো মাটিতে ঝাল প্রবল।।
#ব্যাং ডাকে ঘনঘন। শীঘ্র বৃষ্টি হবে জেনো।
#ডাহিনে ফণী বামে শিয়াল। দহিলে
দহিলে বলে গোয়ালী।। তবে জানিবে যাত্রা শুভালী।।
-বচনটার মানে হচ্ছে ঘর হতে বের
হওয়ার সময় ডানে সাপ বামে শেয়াল দেখলে যাত্রা শুভ হবে। এটাকে হোরা শাস্ত্র বলা হয়। প্রাচীন
ভারতের রাজা থেকে শুরু করে পন্ডিতরাও এই হোরা শাস্ত্র চর্চা করতো এবং মানতো। বরাহ মিহিরও এই শাস্ত্র চর্চা করতেন। শহুরে
মেজাজেও এই রকম বিভিন্ন সংস্কার আছে। তবে
এগুলোকে কুসংস্কার বলার বাজারি রেওয়াজ চালু আছে। সেই আলাপে না গিয়ে বলা যায় আমাদের গ্রামের লোকেরা এই সমস্ত বেশ ভালো ভাবেই
মেনে চলেন, এবং গড়ে ৮০% পল্লিবাসী এই বচন মেনে চলেন।