নাস্তিকতা নিয়ে হিন্দু ধর্মের দৃষ্টিকোণ হতে ছোট একটি গল্প। - 9 August 2011 - হিন্দু ধর্ম ব্লগ - A Total Knowledge Of Hinduism, সনাতন ধর্ম
Hinduism Site
Main » 2011»August»9 » নাস্তিকতা নিয়ে হিন্দু ধর্মের দৃষ্টিকোণ হতে ছোট একটি গল্প।
Added by: Hinduism
1:03 AM
নাস্তিকতা নিয়ে হিন্দু ধর্মের দৃষ্টিকোণ হতে ছোট একটি গল্প।
নাস্তিকতা যার মানে হচ্ছে ঈশ্বরে বিশ্বাস না করা, ঈশ্বর আছে, এই কথাটা আমরা আস্তিকরা বিশ্বাসের সাথে বলে থাকি, এ ব্যাপারে যৌক্তিক প্রমান দাবী করলে হয়তো বলি সব কিছু যুক্তি দিয়ে তো আর প্রমান হয়না, এটাই আমাদের বিশ্বাস। আমি বিশ্বাস করি নাস্তিক হতে হলে শুধু নেই নেই বললেই হয়না, তাকে একজন আস্তিক থেকেও অনেক বেশী জানতে হয়, হয়তো বা আস্তিক যেখানে ফুল থেকে মধু বের করে সেখানে একজন নাস্তিক দেখিয়ে দেয় শুধু মধু না এখানে বিষ ও আছে। আমরা মধু পেলে বলি মারহাবা কিন্তু বিষের কথা শুনতে নারাজ। তবে নাস্তিক বলতে তাদেরকেই বুঝাচ্ছি যে সকল নাস্তিক অনেক পড়াশুনা করে অবশেষে বলেছে ঈশ্বর বলতে কেউ নাই। আমি যেমন আমার মতাদর্শ আপন অধিকার বলে প্রকাশ করতে পারি, তেমনি নাস্তিকও তার মত প্রকাশ করবে এটাতে দোষের কথা দেখছিনা। যদিনা তারা বিনা প্রয়োজনে গালাগালি না করে।
যা হতে একটা ছোট গল্প দিয়ে শেয়ার করছি সবার সাথে।
একদিন নারদ বৈকুন্ঠে যাচ্ছিলেন, পথে দেখেন, একটা পাগল ভগবানকে নানাবিধ কুকথায় গালাগালি, দিতেছে। নারদকে দেখিয়া বলিল, "ঠাকুর, কেলে ছোড়াকে( কৃষ্ণ) জিজ্ঞাসা করিও, আমি আর কতদিনে মুক্তি পাব?" নারদ স্বীকৃত হইলেন। কিছু দুরে দেখেন আর একটি ভক্ত ভগবানের স্তুতি করিতেছে। সেও বলিল, "ঠাকুর, প্রভুকে জিজ্ঞাসা করিবেন আমি কতদিনে মুক্তি পাবো? নারদ এখানেও স্বীকৃত হলো। যথাসময়ে নারদ বৈকুন্ঠে উপনীত হইয়া ভগবানের কাছে দুইজনের কথাই নিবেদন করিলেন। ভগবান বলিলেন, "প্রথম ব্যাক্তি অচিরেই মুক্তি পাবেন, দ্বিতীয় ব্যাক্তির এখনও বহু বিলম্ব আছে"। (এখানে পৃথিবীকে কষ্টের সমুদ্র বলা হয়, তাই মৃত্যুর মাধ্যমে ঈশ্বরকে/বৈকুন্ঠ লাভকেই মুক্তি বলা হচ্ছে)। নারদ সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করিলেন, "ঈশ্বরনিন্দুকের মুক্তি, আর ভক্তের বিলম্ব, এ কিরুপ বিচার?" ভগবান হাসিতে হাসতে বলিলেন, "তুমি প্রকৃত কথা গোপন করিয়া উভয়কেই বলিবে যে, ভগবান একটি হস্তীকে সূঁচের ছিদ্রে প্রবিষ্ট করাইতে ব্যাস্ত আছেন, কোন উত্তর দেন নাই। তাহা হইলে রহস্য বুঝিতে পারবে"। নারদ বিদায় লইয়া ভক্তের নিকটে আসিয়া ভগবদাজ্ঞা জ্ঞাপন করিলেন। ভক্ত বিষাদিত হইয়া বলিল,'প্রভুর কৃপা হয় নাই, তাই অসম্ভব কার্যে প্রবৃত্ত হইয়া আমাকে প্রবঞ্চিত করেছেন।" কিন্তু পাগল নারদের কথা শুনিয়া হাসিয়াই অস্থির। "যার লোমকূপে শত শত ব্রক্ষান্ড(universe) বিরাজ করিতেছে, যার কটাক্ষে সৃষ্টি - স্থিতি - লয় হয়, সূঁচের ছিদ্রে হস্তী প্রবিষ্ট করাই তার বড়ই কাজ। আবার এই জন্য আমার কথার উত্তর দেওয়া হয়নাই।" এই কথা বলিয়া পাগল আরও অকথ্য ভাষায় গালি দিতে লাগল। নারদ এতখনে বুঝিলেন, পাগল প্রকৃত ঈশ্বরতত্ব জানিয়াছে , তাই ভগবান তাকে শীঘ্রই মুক্তি দিতে চাচ্ছেন।
আসলে মূল কথা হচ্ছে ঈশ্বর কি জিনিস তা বুঝতে হবে। আর বেশি কিছু বলবোনা। কারণ যারা বুঝার তারা এতখনে বুঝে নেওয়ার কথা। তবে আবারও বলছি এটা সেই সকল নাস্তিকদের জন্য না যারা নিজেদের নাস্তিকতার নামে অন্য ধর্মের ভুল না ধরে শুধু গালাগালী বা অনুসারীদের হেনস্থা করার জন্য কাজ করে থাকে।
ঈশ্বর হচ্ছে উপলব্ধির বিষয়, সেই আদিম যুগে সাধু ঋষিরা তাকে অন্তরে উপলব্ধি করেই, তার ধ্যান করে তাকে খুজে পেয়েছে। তাই ঈশ্বরকে প্রতিনিয়ত নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে খুজে ফিরি, কখনও সে আমার বন্ধু কখনও বা অভিমান বা কখনও মমতাময়ী মা।