মহা আকাশে অসংখ্য অগণিত ব্রহ্মাণ্ড রয়েছে। আমরা একটি ক্ষুদ্র ব্রহ্মান্ডের ভিতরে রয়েছি। কোন কোন ব্রহ্মান্ডের বিস্তার শতকোটি যোজন, কোন্ওটি নিখর্ব বা ‘দশ সহস্র কোটি’ যোজন, কোনওটি পদ্মাযুত বা ‘দশ লক্ষ কোটি অযুত’ যোজন।
সূর্য থেকে ব্রহ্মাণ্ডের গোলকের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০০ কোটি কিলোমিটার এই হিসাব অনুসারে, ব্রহ্মাণ্ডের গোলকের অন্তবর্তী এক প্রান্ত থেকে বিপরীত প্রান্তের দূরত্ব ৬০০ কোটি কিলোমিটার। এইভাবে আমাদের ছোট ব্রহ্মাণ্ডটির আভ্যন্তরীণ বিস্তার বা পরিধি হচ্ছে ১৩,৬২০ কোটি কিলোমিটার। ব্রহ্মাণ্ডের পুরু আবরণীগুলোকে যুক্ত করলে ব্রহ্মাণ্ডের বিস্তার-পরিমাণ অনেকগুণ বাড়বে। মহাকাশের ব্রহ্মাণ্ড সমূহের ভেতরে কতকগুলি ভুবন আছে। কোন ব্রহ্মাণ্ডে লক্ষ ভুবন, কোন ব্রহ্মাণ্ডে অজুত ভুবন, কোন ব্রহ্মাণ্ডে সহস্র ভুবন, কোনটিতে শতভুবন, কোনওটাতে সত্তর, কোনওটাতে পঞ্চাশ কোনওটাতে কুড়িটি ভুবন আছে। আমাদের ছোট্ট ব্রহ্মাণ্ডে চৌদ্দটি ভুবন রয়েছে। সেগুলি হল- ১) ভূলোক, ২) ভুবর্লোক. ৩) স্বর্গলোক, ৪) মহর্লোক, ৫) জনলোক, ৬) তপোলোক, ৭) সত্যলোক, ৮) অতল, ৯) বিতল, ১০) সুতল, ১১) তলাতল, ১২) মহাতল, ১৩) রসাতল, ১৪) পাতাললোক। সত্যলোকের উত্তরে ধ্রুবলোক এবং পাতাললোকের দক্ষিণে নরকলোক বিদ্যমান। অবশ্য বিশাল ধ্রুবলোক ব্রহ্মার শাসনাধীন নয়।
ব্রহ্মার আবাস সত্যলোক। ব্রহ্মার বহু মাথা, বহু বাহু। কোন কোনও ব্রহ্মাণ্ডের কোটি মুখ, কোনও ব্রহ্মাণ্ডের লক্ষ মুখ, কোনও ব্রহ্মাণ্ডের সহস্র মুখ, কোথাও বা শত মুখ, কোথাও চৌষট্টি মুখ, কোথাও অষ্টমুখ মুখ। আমাদের এই ব্রহ্মাণ্ডের ব্রহ্মা হচ্ছেন চতুর্মুখ অর্থ্যাৎ চার মাথা। সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডগুলিতে বিভিন্ন দেশ বা ভুবন বিভাগ রয়েছে, প্রায়ই ব্রহ্মাণ্ডগুলির জীবও সমতুল্য, তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি প্রায় সমতুল্য। ৮৪ লক্ষ রকমের জীব প্রজাতি প্রত্যেক ব্রহ্মাণ্ডেই আছে বলা যায়। শ্রীকূর্মপুরাণে বলা হয়েছে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীহরি কখনও কখনও সমস্ত ব্রহ্মাণ্ডকে একই সঙ্গে সংহার করে থাকেন। বিষ্ণুধর্মোত্তরে বলা হয়েছে যে, জগৎপতি শ্রীহরি যখন সেই সমস্ত অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ডের এক কালে সংহার করে আত্মারামভাবে অবস্থান করেন সেই সময়টি তাঁর রাত্রি বলে কীর্তিত হয়। পুনরায় যখন শ্রীহরি ব্রহ্মাণ্ডগুলি সৃষ্টি করেন তখন কখনও ভিন্ন আকারে, কখনও বা একরূপ আকারে সৃষ্টি করে থাকেন, সেটি ভগবানের দিন। চিন্ময়-জগৎ ভগবানের অঙ্গজ্যোতিতে আলোকিত থাকে। কিন্তু অভ্যন্তরে অন্ধকার। সূর্য ইত্যাদি জ্যোতিষ্ক গ্রহ দ্বারা ব্রহ্মাণ্ড আলোকিত।
এখানে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। যদিও আপনার মন্তব্যের উত্তর লেখক করবেন তবু আমি একটা কথা বলি হিন্দু ধর্মে নারীকে অনেক সম্মান দেয়া হয়েছে। নারীকে শ্রদ্ধার আসনে বসানো হয়েছে, নারী প্রকৃতি, মহামায়া, আদ্যাশক্তি, সমস্ত ব্রক্ষ্মান্ড মহামায়ার অধীন, শ্রীকৃষ্ণ এর সাথে রাধা সংযুক্ত, একটু খেয়াল করে দেখবেন কখনও শ্রীকৃষ্ণ-রাধা বলা হয়না, বলা হয় রাধা কৃষ্ণ। কারণ শ্রীকৃষ্ণ এই নিয়ম চালু করে গেছেন যে তার আদ্যাশক্তি, শ্রীমতি রাধা রাণীর নাম তার নামের আগে উচ্চারণ করতে হবে। এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। তবে হিন্দু সমাজ ব্যাবস্থায় তৎকালীণ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু ব্যাপার আছে যা বর্তমানে বেখাপ্পা লাগে, তবে অবস্থার প্রেক্ষাপট আলোচনা করলে্ সেটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোন যায়গাটা আপনার কাছে বেখাপ্পা লাগে বলবেন আমরা যথাসাধ্য আলোচনার চেষ্টা করবো।
Ratan দাদা আপনার পোষ্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট। আমি একবার কোথায় যেন শুনেছিলাম মহাবিষ্ণুর প্রতিটি লোমকুপে এইরকম ব্রক্ষ্মান্ড আছে তবে আমাদের জন্য তা অনেক দূরে দুরে। যখন মানুষ এই দূরত্বের বাধা অতিক্রম করার যোগ্যতা অর্জন করবে তার পূর্বেই এই ব্রক্ষ্মান্ড ধ্বংশ হয়ে যাবে। যেন প্রকৃতির নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটে। এটা কি সত্যি ই????
ধন্যবাদ সবাইকে। হ্যাঁ ইদানীং বিজ্ঞানীরা এমন অনেক তথ্য খুঁজে পাচ্ছে যা একমাত্র বৈদিক শাস্ত্র ছাড়া কোথাও নেই। অথচ এতদিন যা আবিস্কার হয়েছে তা সবই বৈদিক শাস্ত্রে বিদ্যমান। সমস্ত বৈদিক শাস্ত্রের সারাতিসার হল শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা। এই গীতা হল সমস্ত ধর্ম বা জ্ঞানের সুপার মার্কেট। অর্থ্যাৎ জগতের অন্য সমস্ত ধর্মে যা আছে, তা গীতাতে সবই আছে। এখানে এমন কিছু তথ্য বিস্তারিত আছে আছে যা অন্য কোন ধর্মে নেই। নারীরা কখনই ভোগের বস্তু নয়। এমনটি ভাবাও পাপময় কাজ। কারণ এতে মাতৃ জাতির অবমাননা করা হয়। নারী অপমান ভগবান কখনই ক্ষমা করেন না, যা শাস্ত্রে স্পষ্ট করা আছে। পদ্মফুল দাদা ঠিকই বলেছেন। শাস্ত্র মতে বিবাহিত নারী মাত্রই তার স্বামীব্যতীত সকলের নিকট মায়ের সমান। অবিবাহিত নারী হল বোনের মত। তবে ব্রহ্মচারীদের দৃষ্টিতে সকল নারীই মা। অন্যদের মত শুধু হিন্দু/মুসলিম/খ্রিস্টান/বৌদ্ধ নারীই যে শুধু সম্মানের তা নয়, সমস্ত নারীই সম্মানের যোগ্যা।
পদ্মফুল দাদা, ভাগবতমে আছে, কৃষ্ণের অংশপ্রকাশ মহাবিষ্ণুর লোমকূপ থেকে নিঃশ্বাসকালীন সময়ে সহস্র-কোটি ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হয় এবং নিঃশ্বাস গ্রহণ কালে ব্রহ্মাণ্ডগুলি পর্যায়ক্রমে ধ্বংস হয়। আপনার "যখন মানুষ এই দূরত্বের বাধা অতিক্রম করার যোগ্যতা অর্জন করবে তার পূর্বেই এই ব্রক্ষ্মান্ড ধ্বংশ হয়ে যাবে। যেন প্রকৃতির নিয়মের ব্যত্যয় না ঘটে। এটা কি সত্যি ই????" -এর উত্তর পরে জেনে দেবার চেষ্ঠা করব। এটা আমার জানা নেই।
রাজেন্দ্র দাদা, আপনার অভীলাষ পূর্ণ হোক। এটা সম্ভব, তবে যোগ্যতা অর্জন পূর্বক দেহ ব্যতিত এই দেহে সম্ভব নয়। আমাদের এই দেহ শুধু এই চতুর্মুখী ব্রহ্মার শাসনাধীন ব্রহ্মাণ্ডেই ভ্রমনের উপযোগী। ভাগবতম পড়লে ফূর্ণ উপলব্ধি সম্ভব, তবে তা পড়তে হবে কোন শুদ্ধ ভক্তের তত্ত্বাবধানে। তা না হলে ভাগবতম অপ্রকাশিত থাকে। কমেন্টের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।