Main » 2011»July»9 » বাংলাদেশের হিন্দু দের অবস্থান- একটি দীর্ঘশ্বাস মূল্ক পোস্ট
Added by: rajendra
2:40 PM
বাংলাদেশের হিন্দু দের অবস্থান- একটি দীর্ঘশ্বাস মূল্ক পোস্ট
মানুষ
ধর্মীয় চেতনা ধারণ করলে তাতে তেমন ক্ষতি হয় না, মানুষের ধর্মীয় চেতনা
পরিচিত জনের পীড়ার কারণ হলেও তেমনভাবে তা বিশাল একটা ভোক্তা শ্রেণীকে
আক্রান্ত করে না। তবে যখন প্রতিষ্ঠান ধর্মীয় চেতনা ধারণ করে কিংবা
প্রতিষ্ঠান নিজেই সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মীয় চরিত্র এবং চিহ্ন ধারণ করে তখন
সেটা সামগ্রীক ভাবে সকল ভোক্তা এবং কর্মীর ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠে।
ধর্মীয় পরিচয় নির্ধারণ করে এমন স্মারক পরিধান করা কিংবা না করাটা ব্যক্তি
মানুষের নিজস্ব স্বাধীনতা, তার বিশ্বাসের স্বাধীনতার মতোই এটার অধিকার
যথাযথ পালিত হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়, তবে গতকাল প্রদত্ত আদেশ বলে শাহজালাল ইসলামী
ব্যাংকের সকল মহিলা কর্মীকে এখন থেকে স্কার্ফ বেধে আসতে হবে। এই ধর্মীয়
চিহ্ন ধারণ করাটা তাদের চাকুরির কোনো শর্তে না থাকলেও যেহেতু নিয়োগ
বিধিমালায় বলা আছে প্রয়োজনে কতৃপক্ষ নতুন কোনো আইন কিংবা বিধান প্রণয়ন
করিতে পারিবে, সেই বিশেষ ক্ষমতা বলে এখন সকল মহিলা কর্মীকে মাথায় স্কার্ফ
বেধে চাকুরিতে আসতে হবে। মাথায় স্কার্ফ বাধা উচিত কিংবা অনুচিত এই
বিতর্ক না করে শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাংকিং চেতনা ধারণ করে সকল মহিলা কর্মীর
জন্য স্কার্ফ বাধ্যতা করার বিধিটা আদৌ সঙ্গত কি না এই প্রশ্নটাই আমার
ভেতরে ডালপালা মেললো। আমার অন্য সকল প্রশ্নের ভেতরে এই প্রশ্নটাই
প্রথমে ছিলো, এটা ঠিক কি উপলক্ষে জারি করা হলো? শোভনতা সৌজন্যতা এবং শরিয়া
মোতাবেক ব্যাংকিং চালানোর জন্য। আমি আশ্চর্য হলাম। বন্ধুকে বললাম তোমাদের
এখানে অন্য ধর্মের কোনো কর্মচারী নেই? তার উত্তর ছিলো বর্তমানে মনে
হয় নেই- তাই এই বিধান যে কারো ধর্মীয় স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করবে না এমন না,
তবে সেটা বিধর্মীর উপরে ধর্মীয় চিহ্নের আগ্রাসন হয়ে উঠবে না। আমাদের
বাংলাদেশের পূঁজিবাজারে শাহজালাল ব্যাংকের শেয়ারের দাম ভালো। বলা চলে চড়া,
তবে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র পূঁজির চলন, যা শেয়ার বাজারে কোনো প্রতিষ্ঠানের
উপরে আস্থা এবং অনাস্থার প্রকাশ ঘটায়, যেখানে সচেতনতার স্পষ্ট অভাব।অন্তত
অন্য কোনো দেশে এমন ধর্মীয় বিভাজনমূলক যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া
পড়তো শাহজালাল ব্যাংকের শেয়ারের মূল্যে। যেকোনো ধর্মীয় আগ্রাসনকে
শেয়ারহোল্ডাররা বিনিয়োগের পক্ষে ক্ষতিকারক ভেবে থাকেন, তাই তারা খুব
দ্রুতই এই শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতেন এবং এই অনাস্থার প্রভাব পড়তো
শেয়ারের দামে। এই সাম্ভাব্য অনাস্থার ভয়েই প্রতিষ্ঠানগুলো যে দেশে- যে
ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করুক না কেনো একটা আপাত অসাম্প্রদায়িক, ধর্ম নিরপেক্ষ
চরিত্র বজায় রাখে। শাহজালাল ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করলো, এর
পরবর্তীতে সেখানে অন্য কোনো ধর্মের কর্মচারির নিয়োগ পাওয়া দুরহ। অন্তত এমন
স্পষ্ট ধর্মীয় চেতনা যে প্রতিষ্ঠানে রয়েছে সেখানে অন্য ধর্মের কোনো কর্মী
কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না। প্রতিষ্ঠান যখন এভাবে ধর্মীয়
চিহ্ন ধারণ করতে চায় এবং সেটাকে প্রতিষ্ঠানের বিধিতে স্পষ্ট করে প্রকাশ
করে সেই প্রতিষ্ঠান অসাংবিধানিক আচরণ করে। বাংলাদেশের সংবিধানে কোথাও এই
ধর্মীয় বিভাজনের সুযোগ নেই, যোগ্যতার বিচারে বিশেষ কোনো ধর্মের প্রাধান্যও
নাকচ করা হয়েছে। তবে বর্তমানের বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসে আছে
পাকিস্তানের ভুত, তাই এই একটা প্রতিষ্ঠান শুধু নয়, বরং ধর্মীয় চেতনা
ধারণকারী অন্য সকল ইসলামী প্রতিষ্ঠানের অনেকখানেই অন্য ধর্মাবলম্বীদের
হেনেস্থার শিকার হতে হচ্ছে। আল মানারাত নামের একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
আমার এক পরিচিত শিক্ষকতার জন্য আবেদন করতে গিয়েছিলো, সেখানে নিয়োগ
বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও বলা ছিলো না বিশেষ একটা ধর্মকে প্রধান্য দেওয়া হবে।
আমার এক পরিচিত রঞ্জন বণিক সেখানে গিয়েছিলো- তার শিক্ষাগত সনদ দেখে,
তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়ন পত্র দেখে ইন্টারভিউ বোর্ডের প্রথম প্রশ্ন
ছিলো আপনি কি কালেমা তাইয়্যেবা জানেন? যার নাম রঞ্জন বণিক, যে তার
সিভিতে স্পষ্ট উল্লেখ করেছে তার ধর্ম হিন্দু- তাকে এই প্রশ্নটা করাটা উচিত
হয়েছে কি না এটাও একটা বিবেচনার বিষয়। সে বের হয়ে আসবার সময় একটাই কথা
বলেছিলো ইন্টারভিউ বোর্ডকে। আমার মনে হয় না পদার্শ বিজ্ঞান পড়ানোর সাথে
কালেমা তাইয়্যেবা জানবার কোনো সম্পর্ক আছে। আমি ভেবেছিলাম এটা
বিচ্ছিন্ন একটা ঘটনা। তবে ভুল ভাঙলো, তার দুই বছর পরে ফয়সাল কিংবা ফাহাদ,
কোনো এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে সেখানে চাকুরির আবেদন
করলো বিকাশ কুমার দাস- ইন্টারভিউ বোর্ডে তাকে প্রথম যে প্রশ্নটা করা হলো আপনি সুরা ফাতিহা তেলাওয়াৎ করেন।
প্রশ্নটা অনেক দিন ধরেই করছি- বাংলাদেশ আদৌ কোনো ভাবে ধর্মান্ধ একটা
রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে না কি এটা বাংলাদেশের সমাজ মানসেই ছিলো। এই বিধর্মী
বিদ্বেষ যা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেটাকে তীব্র ঘৃনা এবং এই
প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই। ----------- লিংক: সামহোয়ারইন ব্লগ http://bdhindu.blogspot.com/2008/08/blog-post_20.html
দাদা আমাদের দেশের মানুষ একটু ধর্মভীরু এটা ঠিক কথা, এটা খারাপ ও না, কিন্তু কিছু কিছু গোষ্ঠী এটাকে ধর্মান্ধ এর পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক ছোট চাকরীর বিজ্ঞাপনে দেখি নামাজী হতে হবে। কবে যে বলে সুন্নতে খৎনা করা থাকতে হবে। ভয়ে আছি করিয়েই ফেলবো নাকি