0 6
(09-01-2012 5:18 AM)
[ Entry]
অশ্বমেধ যজ্ঞের অজানা ইতিহাস: সত্যযুগের নীলছবি, কলিযুগে তো ক্যামেরা রয়েছেই!
যারা যজ্ঞ নামটা শুনেছেন তারা অবধারিতভাবে অশ্বমেধ নামটাও শুনেছেন, বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ অশ্বমেধযজ্ঞই যজ্ঞসমূহের মধ্যে সবচেয়ে নামকরা, কারণ প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত সব রাজাই অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছেন। আমরা যারা অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা রাখি তারা জানি, অশ্বের মেদ বা চর্বি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে যে যজ্ঞ হয় তাই অশ্বমেধ যজ্ঞ। প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের রাজারা অশ্বমেধ যজ্ঞ করে হিন্দুদের চোখে পূজনীয় হতো, সাহিত্য ইতিহাসে তাদের নাম এই যজ্ঞের সুবাদেই অক্ষয় হয়ে থাকত।
দূর্গাপুজার ইতিহাসে রয়েছে, "পাঠান যুগের গোড়ার দিকে বরেন্দ্রভূমিতে- মানে, উত্তর বাংলার রাজশাহী জেলার তাহেরপুরে কংস নারায়ণ রায় নামে একজন রাজা ছিলো। গৌড় রাজ্যের শাসকদের জায়গীরদার তাহের খাঁর নামানুসারে ‘তাহেরপুর’ নামকরণ হয়েছিলো। এর পূর্ব নাম ছিলো সাপরুল। তাহের খাঁকে পরাজিত করে কংস নারায়ণ তাহেরপুর দখল করে এবং লুটপাট চালিয়ে অকল্পনীয় ধন-সম্পদ হস্তগত করে। অতঃপর নিজের শক্তি ও মহিমা সর্বজনে প্রকাশ করতে অশ্বমেধ যজ্ঞ করার সংকল্প করে। সে তার সময়ের পণ্ডিতদের ডেকে বললো, ‘আমি রাজসূয় কিংবা অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে চাই। মানুষে জানুক আমার ধন ঐশ্বর্য কি রকম আছে, আর দু’হাতে ফেলে ছড়িয়ে দান করবো।’ শুনে পণ্ডিতেরা বলেছিলো, ‘এই কলিযুগে রাজসূয় বা অশ্বমেধ যজ্ঞ হয় না, তাই মার্কণ্ডেয় পুরাণে যে দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসবের কথা আছে, তাতেও খুব খরচ করা যায়, জাঁকজমক দেখানো যায়, নিজের ঐশ্বর্য দেখানো যায়। আপনি মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে এই দুর্গোৎসব করুন।’ তখন রাজা কংস নারায়ণ রায় তৎকালীন সাতলক্ষ স্বর্ণমুদ্রা (বর্তমান বাজার মূল্যে ছয়শ’ কোটি টাকা প্রায়) ব্যয় করে প্রথম দুর্গাপূজা করে। "
অশ্ব মেধ যজ্ঞ প্রাচীন ভারতের একটি বহুল চর্চিত ধর্মীয় রীতি। বৈদিক যুগে রাজা মহারাজারা পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে বা কোন মহান কার্য সম্পাদনের পুর্বে অথবা পুত্র সন্তান লাভের জন্য ঐশি আনুকুল্য পাওয়ার লক্ষে অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করতেন। তারা যজ্ঞের আয়োজন করুন ভালো কথা ..কিন্তু সেই বহুল আলোচিত অশ্বমেধ যজ্ঞে কি হতো?
অযোধ্যার মহান রাজা দশরথ থেকে শুরু করে অনেক বিখ্যাত নৃপতিরা অশ্বমেধ যজ্ঞ সম্পাদন করেছেন। ঘোড়ার গোশত দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়। ২৪ এর বেশী এবং ১০০ বছরের কম কোন ঘোড়া উৎসর্গের মাধ্যমে এই যজ্ঞ সম্পাদন করা হতো। প্রথমে ঘোড়াটা ছেড়ে দেয়া হয়। এই ঘোড়া এক বছর যেখানে খুশী সেখানে ঘুরে বেড়ায় তারপর এটাকে ফিরিয়ে আনা হয়।
যজ্ঞ অনুস্টানের এক পর্যায় যজ্ঞের দিন যজ্ঞ আয়োজকের প্রধান রানী যজ্ঞ ক্ষেত্রের সামনে প্রকাশ্যে যজ্ঞের প্রধান পুরোহিতের সাথে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হত..এবং যজ্ঞের অন্যান্য পুরোহিত ও অন্য রানীরা ঐ যৌন মিলনের নানা দৃশ্যের বর্ননা দিতো উচ্চ স্বরে…এক কথায় যজ্ঞের পরিবেশটা ছিলো খিস্তি খেউরে যোগে যজ্ঞে উপস্থিত নারী পুরুষদের মধ্যে যৌন উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া।(তথ্যসুত্রঃ অলৌকিক নয় লৌকিক-প্রবীর ঘোষ।)
পরবর্তি যুগে যজ্ঞের পুরোহিতের জায়গা নেয় যজ্ঞের জন্য আনিত ঘোড়াটি।যজ্ঞে প্রধানা রানী অশ্বের লিংগটি নিয়ে তার যোনীর সাথে স্পর্শ করতেন ও নিম্নত্তোক বেদমন্ত্র উচ্চারন করত এবং যজ্ঞে উপস্থিত পুরোহিত ও রানীরা সেই মৈথুন দৃশ্যের বর্ননা করতেন।
‘O horse, you are, protector of the community on the basis of good qualities, you are, protector or treasure of happiness. O horse, you become my husband.’” [Yajur Veda 23/19.]
“O Horse, I extract the semen worth conception and you release the semen worth conception’” [Yajur Veda 23/20]
এবং যজ্ঞ আয়োজন কারী ব্যক্তিটিকে বলতে হতো…
“O horse, please throw semen on the upper part of the anus of my wife. Expand your penis and insert it in the vagina because after insertion, this penis makes women happy and lively” [23/21]
অতপর সেই ঘোড়া কেটে গোশত দিয়ে ভোজ সভায় আমন্ত্রিতদের আপ্যায়িত করা হত।
মহাভারতের আদিকান্ড থেকে পাওয়া যায় অশ্বমেধ যজ্ঞের পর ঋষ্যশৃঙ্গ রাজা দশরথকে এরপর পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করার পরামর্শ দেন এবং যজ্ঞের ফলে অলৌকিক পায়েস আসল। সেই পায়েস রানিদের খেতে দেয়া হলো। দশরথের তিন রানি কৌশল্যা, কৈকয়ী, সুমিত্রা। কিছুদিন পর তাঁদের ছেলে হলো। কৌশল্যার একটি, নাম রাখা হয় রাম। কৈকয়ীর একটি, নাম ভরত। সুমিত্রার দুই ছেলে লক্ষ্ণণ এবং শত্রুঘ্ন।
|