অন্ত মানে শেষ। ইষ্টি মানে যজ্ঞ। সুতরাং ‘অন্তেষ্টি’ শব্দের অর্থ শেষ যজ্ঞ। এই শেষযজ্ঞ বলতে বোঝায় অগ্নিতে মৃতদেহ আহুতি দেওয়া। সোজা কথায় পচনশীল মৃতদেহটি সযন্তে দাহ করা। অন্তেষ্টিক্রিয়ার সুনির্দিষ্ট মন্ত্র ও বিধি-বিধান আছে। দাহকারী কে কে হতে পারে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তার ক্রমও নির্দিষ্ট আছে। দাহের অধিকারী জ্যেষ্ঠপুত্র, অভাবে অন্যপুত্রগণ, অভাবে শাস্ত্র নির্দেশিত অন্য কোন ব্যাক্তি স্নান করে শবদেহ শ্মশানে এনে প্রথমে অন্নপাক করতে হবে। মৃত দেহকে কখনও বস্ত্রশূন্য করতে নেই। শবদেহে ঘি মাখিয়ে স্নান করাতে হবে।
স্নান মন্ত্র :-
গয়াতীর্থ বিষ্ণুর মাহাত্ম্য জড়িত। কুরুক্ষেত্র, গঙ্গা, যমুনা, কৌশিকী, চন্দ্রভাগা প্রভৃতি নদী সকল পাপ নাশ করে। ভদ্রা অবকাশ, গন্ডকী, সরযু প্রভৃতি পবিত্র নদী। বৈনব বরাহ প্রভৃতি তীর্থসমূহে পিণ্ডদান করা হয়। পৃথিবীর যাবতীয় তীর্থ ও পবিত্র নদী, জলাশয় সাগরাদী এখানে সম্মিলিত হোক।
এরপর মৃত দেহকে নব বস্ত্র পরাতে হয়। ব্রাহ্মণ হলে পৈতা দিতে হবে। গায়ে চন্দনাদী মাখিয়ে, দুই চোখ, দুই কানে, নাসিকের দুই ছিদ্রে সোনার টুকরা দিতে হবে। যদি সোনা না থাকে তাহলে কাঁসার খন্ড দেয়া যেতে পারে। তারপর পূর্বের পাক করা অন্নের অর্ধেক ফেলে দিয়ে পিণ্ডদানকারী পিণ্ড দান করবে।
পিণ্ডদান প্রণালী :- পিণ্ডদাতা পরিষ্কার ভূমিতে গোময় লেপন করে বাম জানু পেতে দক্ষিণমুখী হয়ে বসবেন। তারপর বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক পিণ্ডদান করবেন। এই নিয়মটি সকলের জন্য প্রযোজ্য।
অতঃপর অগ্নিদাতা আবার স্নান করে পরিষ্কার ভূমিতে উত্তর দক্ষিণে দীর্ঘ করে চিতা কাষ্ঠ সাজাবেন। চিতার ওপর বস্ত্র দিয়ে মৃত দেহকে উত্তর দিকে মাথা দিয়ে ( সামবেদী হলে দক্ষিণ দিকে মাথা করে) পুরুষ হলে উপুড় দিয়ে আর স্ত্রীলোক হলে চিত করে) শোয়তে হবে। তারপর অগ্নিগ্রহন করে শবদেহ ৭ বা ৩ বার প্রদক্ষিন এবং নিম্ন বাক্যগুলি পাঠ করতে হবে। ---- এই মৃত ব্যাক্তি জীবিত অবস্থায় জেনে বা না জেনে লোভে এবং মোহে অনেক অপকর্ম করতে পারন। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন কারণ মানুষ মরণশীল এবং মৃত্যুর বশ বলেই পঞ্চ মহাভূতে দেহ ত্যাগ করেছেন। এই মানব জীবন ধর্ম, অধর্ম এবং লোভেও মোহযুক্ত। এই ব্যাক্তির সর্বগাত্র দহন করে দিব্যলোকে নিয়ে যান।
পিণ্ডদাতা এই মন্ত্র পাঠ করে নিজে দক্ষিণ মুখ হয়ে দেহের মুখে প্রদান করবে । পরে আবার দাহ প্রায় সমাপ্ত হবার পরে সাতটি কাঠি চিতায় প্রদান করবে। দাহকারীগণ ৭ বা ৩ কলস জল দিয়ে চিতার অগ্নি নিবিয়ে ফেলবে। পরে একটি জলপূর্ণ কলস ওপরে রাখবে। মৃত ব্যক্তির কিছু অস্থি জলে নিক্ষেপ করবে। কুঠার বা লোষ্ট্র অর্থাৎ মাটির ঢেলা দিয়ে কলসটি ভেঙ্গে শ্মশান ত্যাগ করবে। দাহ শেষে স্নানের সময় একটি ডুব দিয়ে প্রেতের উদ্দেশ্যে এবার তর্পণ করবে। তারপর বাড়িতে প্রবেশের পূর্বে নিমপাতা দাঁতে কেটে অগ্নি ও পাথর স্পর্শ করে ঘরে ঢুকবে।
এগুলো না হয় ঠিকাছে, কিন্তু দাদা মৃতের শ্রাদ্ধের জন্য যে ব্রক্ষ্মচর্য পালন করতে হয়, তার জন্য পরিবারের সবার সাথে সাথে শরীকদের ও নিরামিষ খেতে হয় ও অনেক অনেক নিয়ম কানুন মানতে হয়, এর উৎস টা কোথায়??
ব্রক্ষ্মচর্য পালন করলে ধর্ম কর্ম করা যায়না এটা ঠিক মানতে পারলামনা। আপনি যে সময় পালন করেছেন তখন আপনার বাবার শোকে আপনার মন বিষন্ন ছিল বিধায় আপনি তা করতে পারেন নি। কিন্তু ধর্ম করার সব চেয়ে ভাল সময় হচ্ছে ব্রক্ষ্মচর্যকালীন সময়ে, মন শান্ত থাকে, বাজে চিন্তা আসেনা। এভাবে অনেক কিছু করা যায় তখন। আমি নিজে অনেকদিন ব্রক্ষ্মচর্য করেছি তাই আমার জ্ঞানমতে বলতে পারছি।